সরকারের কাছ থেকে সুবিধা নেয়া নেতাদের তালিকা চেয়েছেন তারেক রহমান
নাশরাত আর্শিয়ানা চৌধুরী : বিএনপির অনেক নেতাই রাতের আঁধারে সরকারের কাছে যান। সরকারের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও সরকারদলীয় জোটের নেতাদের কাছে গিয়ে নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন। যাতে করে তাদের বিরুদ্ধে মামলা না হয় ও তারা কোনো ঝামেলায় না পড়েন। নিরাপদে ব্যবসা করতে পারেন। এছাড়াও বিদেশে যেতে পারেন। সরকারি দলের নেতাদের ও সরকার সমর্থক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সুম্পর্ক রেখে যৌথ ব্যবসা পেতে পারেন। বিনিময়ে তারা কিছুটা সুবিধা পেয়ে থাকেন। ওই সুবিধা নিয়ে তারা ব্যবসা-বাণিজ্যও চালিয়ে যাচ্ছেন।
ওইসব নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগÑ বিএনপি হরতাল কর্মসূচি দিলে মাঠে নামেন না। ঘরে বসে থেকে টিভি দেখেন। টিভিতে খবর দেখে এনিয়ে আবার বিভিন্ন গণমাধ্যমে সাক্ষাতকার দেন। এনিয়ে বেশ কিছু দিন ধরেই বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতার নাম জানতে পেরেছিলেন তারেক রহমান। তিনি এটা জানার পর ওইসব নেতার ব্যাপারে নাখোশও হন। তবে ওই তালিকা সম্প্রতি নাকি আরো বড় হয়েছে। এ ব্যাপারে তারেক রহমান দলের সুবিধাভোগী নেতাদের তালিকা চেয়ে পাঠিয়েছেন। গোপনে ওই সব নেতার ব্যাপারে খবর নিয়ে জানাতে বলেছেন। কোন কোন নেতা সরকারি দলের নেতাদের সঙ্গে ব্যবসা করছেন ওই সব নেতাদেরও নাম পাঠানোর পাশাপাশি কি কি ব্যবসা করছেন সেটাও ঠিক করতে বলেছেন।
এদিকে গতকাল আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপির অনেক নেতাই বিদায়ের সানাই বাজাচ্ছেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ বই লিখেছেন। সেটা লিখে বিদায়ের সানাই বাজান। তিনি আরও বলেন, বিএনপির অনেকে এখন রাতের আঁধারে সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। তারা সুবিধা নিচ্ছেন। তার মতে, বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটে ২০ দলের ৭টি দলের হদিস নেই। আর যেসব দল তাদের জোট থেকে বের হয়ে গেছে ওইসব নেতাদের ও দলকে কাছে টানার চেষ্টা করছে। তাদের লক্ষ্য হচ্ছে ২০ দলের নাম ব্যবহার। তার এ কথার সত্যতা বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছেও রয়েছে।
তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, গত ৩ বছর ধরেই দলের বিভিন্ন স্তরের নেতাদের কারো কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে যে, তারা দলের চেয়ে ব্যক্তি স্বার্থকে বড় করে দেখছে। এ কারণে তারা মাঠে নামছেন না। রাজনীতি নিয়ে বড় কোনো কথা বলছেন না। সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলছেন না। সরকারের বিরুদ্ধে কোনো কর্মসূচি দিলেও মাঠে নামেন না। ওইসব নেতা সরকারের সঙ্গে থেকেই সব সুবিধা নিচ্ছেন। এই কারণেই তাদের আন্দোলনে সাফল্য আসছে না। নেতাদের এই ধরনের সুবিধাভোগী আচরণ বহাল থাকলে বিএনপির পক্ষে আগামীতেও আন্দোলনে সফল হওয়া সম্ভব হবে না।
সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা ও সুবিধা নেয়া ওইসব নেতার ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য পাওয়ার পর তা খতিয়ে দেখে দলের ভেতরে সুবিধাভোগী নেতাদের আর গুরুত্বপূর্ণ কোনো দায়িত্বেও রাখা হবে না। যেসব নেতা সরকারের সুবিধা নিয়ে ব্যবসা করছেন ও দলের কথা চিন্তা না করে নিজেদের নিরাপদে রাখছেন তাদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নিবেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। শাস্তিসরূপ তাদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব থেকে কাজ না করার জন্য বলা হবে। আগামী দিনে তারা সরকার গঠন করতে পারলেও ওই সব নেতা কোনো দায়িত্ব পাবেন না।