স্ত্রীদের জঙ্গি বানাতে জোর করতো স্বামীরা
নিজস্ব প্রতিবেদক : জঙ্গিবাদে জড়িত ব্যক্তিরা নিজেদের স্ত্রীদের এ কাজে যুক্ত করতে জোর খাটিয়েছেন। আত্মসমর্পণপূর্বক গ্রেফতার হওয়া নারী জঙ্গিদের জিজ্ঞাসাবাদে এ তথ্য জানতে পেরেছেন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা।
মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) ডিএমপি মিডিয়া কক্ষে এসব কথা বলেন কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘পুলিশ আশোকনার ঘটনার তদন্তে অনেকটাই নিশ্চিত হয়েছেন যে নারী জঙ্গিরা স্বেচ্ছায় জঙ্গিবাদে জড়িত হয়নি। এদের ওপর জোর খাটানো হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘পুলিশ এখন পর্যন্ত এমন কোনো তথ্য পায়নি যা প্রমাণ করবে নব্য নারী জঙ্গিরা স্বেচ্ছায় জঙ্গিবাদে নাম লিখিয়েছে। পুরো ঘটনার তদন্ত চলছে। আর কোন কোন নারীরা জঙ্গিবাদে জড়িত তাদের খবর নেয়া হচ্ছে।’
প্রসঙ্গত, সাকিরা নামে এক নারী জঙ্গি ২৬ ডিসেম্বর সোমবার আশকোনায় পুলিশের অভিযানে আত্মঘাতী বিস্ফোরণের নিহত হন। এ সময় তার সঙ্গে থাকা শিশু সাবিনাও স্প্রিন্টারের আঘাতে গুরুতর আহত হয়। সাবিনা এখন ঢামেক হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন আছে।
নিহত জঙ্গি সাকিরার প্রথমে বিয়ে হয় ইকবাল নামে এক ব্যক্তি সঙ্গে। পরে ক্যানসার আক্রান্ত হয়ে ইকবাল মারা গেলে সুমন নামে সন্দেহভাজন এক জঙ্গির সঙ্গে তার দ্বিতীয় বিয়ে হয়। এই সুমনকে পুলিশ একবার গ্রেফতার করেছিল। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে এই তথ্য এখনও নিশ্চিত করা হয়নি।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) ভোরে রাজধানীর দক্ষিণখান আশকোনায় জঙ্গি আস্তানায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালায় পুলিশ। এসময় পুলিশের নির্দেশে শিশুসহ চার নারী জঙ্গি আত্মসমর্পণ করলেও আস্তানার ভেতরে অবস্থান নেন আরও তিনজন। তাদেরই একজন সাকিরা। যিনি আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটিতে নিহত হন। তিনি জঙ্গি সুমনের স্ত্রী। গুরুতর আহত হয়ে তার মেয়ে সাবিনা এখন ঢামেকে চিকিৎসাধীন। প্রায় একই সময় আজিমপুরে নিহত জঙ্গি তানভির কাদেরীর ছেলে শহীদ কাদেরীর লাশ পাওয়া যায় ওই ভবনের ভেতর।
অভিযানে অংশ নেয় পুলিশের বিশেষ বাহিনী কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিসিটিসি) ইউনিট, ডিবি, র্যাব এবং সোয়াতের সদস্যরা। এ সময় আশপাশে অবস্থানরত বাসিন্দা ও গণমাধ্যমকর্মীদের সরিয়ে দেয়া হয়। বিকেল সাড়ে ৪টায় অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।