আজিজাকে পুড়িয়ে মারা সেই চাচি গ্রেফতার
ডেস্ক রিপাের্ট : নরসিংদীতে কিশোরী আজিজাকে পুড়িয়ে হত্যা মামলার প্রধান আসামি বিউটি বেগম ও তার মা হোসনে আরাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মঙ্গলবার ভোর চারটার দিকে সিলেটের বিশ্বনাথের একটি গ্রাম থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে র্যাব-৯ এর একটি দল। র্যাব-৯ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আলী হায়দার আজাদ আহমেদ এ তথ্য জানিয়েছেন।
গত শুক্রবার রাতে কে বা কারা আজিজাকে তুলে নিয়ে হাত-মুখ বেঁধে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। শনিবার ভোরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
আজিজার (১৪) বাড়ি নরসিংদীর শিবপুর থানার খৈনকুটে। তাকে মোবাইল ফোন চুরির অভিযোগে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পরিবারের। তবে পুলিশ বলছে, চাচি বিউটি বেগমের পরকীয়া ও অনৈতিক সম্পর্কের কথা জেনে ফেলায় প্রাণ দিতে হয়েছে তাকে।
এ ঘটনায় শনিবার রাতে আজিজার বাবা আবদুস সাত্তার চারজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও তিনজনকে আসামি করে শিবপুর থানায় মামলা করেন। পুলিশ রাতেই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি তমুজাকে গ্রেপ্তার করে।
তমুজার উদ্ধৃতি দিয়ে পুলিশ জানায়, তিন মাস আগে আজিজার চাচা মালয়েশিয়া যায়। স্বামী বিদেশে যাওয়ার পর তার চাচি বিউটি বেগম পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। এরই মধ্যে তাকে প্রেমিকের সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলে আজিজা। এরপর থেকেই আজিজাকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করে সে। সাজানো হয় মোবাইল চুরির নাটক। পরিকল্পিতভাবে মোবাইল চুরির অপবাদ দেওয়া হয় আজিজা ও তার বোনকে।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ১৯ অক্টোবর আজিজার চাচি বিউটি বেগমের মোবাইল ফোন চুরি হয়। এ জন্য তিনি আজিজাকে দোষারোপ করেন এবং হুমকি দেন, ফোন না দিলে আজিজাকে তিনি আগুনে পুড়িয়ে মারবেন।
শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে মুরগির খামারের জন্য কেরোসিন তেল আনতে খৈনকুট বাজারে যায় আজিজা। এরপর মিজানের দোকান থেকে তেল কিনে বাড়িতে রওনা হয় সে। রাত সাড়ে ৯টার দিকে বাড়ির কাছে রবিউল্লাহ ফরাজির বাগানে চিৎকার শুনে ও আগুন দেখে লোকজন গিয়ে আজিজার শরীরের আগুন নেভায়। এরপর দ্রুত নরসিংদীর ১০০ শয্যার হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে ঢামেক হাসপাতালে পাঠান।
এজাহারে আরও বলা হয়, ঢাকায় নেওয়ার পথে অ্যাম্বুলেন্সে আজিজা বলেছে, বিউটি, রুবেল, তমুজা, সানোয়ারা এবং আরও তিনজন জোর করে রবিউল্লাহ ফরাজির বাগানের নিয়ে তাকে বেলগাছের সঙ্গে বাঁধে। এরপর তারা তার শরীরে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়।