সাংবাদিকদের গলা কাটতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নির্দেশ!
নিজস্ব প্রতিবেদক : বের হয়ে আসতে শুরু করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের গোপন নির্দেশ। কেন্দ্র থেকে নাকি এরইমধ্যে সাংবাদিকদের গলার কাটার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি শরিফুল ইসলাম গর্বের সঙ্গে এমন দাবি করেছেন।
তিনি বলেছেন, ‘দুই একটা সাংবাদিকের গলা কেটে ফেললে কিছুই হবে না। এটা আমার কেন্দ্র থেকে নির্দেশ দেওয়া আছে। সোমবার দুপুর সাড়ে ৩টায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের কার্যালয়ের পাশের কক্ষে দ্বিতীয় দফায় ১৫ জন সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করার সময় এ দাবি করেন শরিফুল।
এর আগে দুপুর ৩টার দিকে প্রক্টর অশোক কুমার সাহার দফতরে প্রথম দফায় শরিফুলের নেতৃত্বে সাংবাদিকদের মারধর করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা আড়াইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র ও ছাত্রদল কর্মী সাইফুল ইসলামকে প্রক্টর অশোক কুমার সাহার দফতরে ধরে নিয়ে যায় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এ সময় সাইফুলকে শিবির কর্মী আখ্যা দিয়ে প্রক্টরের সামনেই লাঠি দিয়ে মারধর করেন শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি শরিফুল ইসলাম ও তার অনুসারিরা। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিরা এ ঘটনার খবর সংগ্রহ করতে প্রক্টরের দফতরে গেলে শরিফুল বলেন, ‘সাংবাদিকদের ওপর শিবির ভর করেছে। উপস্থিত সাংবাদিকরা এ কথার প্রতিবাদ করলে শরিফুল বাংলাদেশ প্রতিদিনের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক মাহবুব মোমতাজীকে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়ে ছাত্রলীগ কর্মীদের পেটানোর নির্দেশ দেন।
এ সময় প্রক্টরের সামনেই ছাত্রলীগ কর্মীরা মাহবুবকে মারপিট শুরু করে। উপস্থিত অন্য সাংবাদিকরা তাকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে তাদের উপরও হামলা চালায় ছাত্রলীগ কর্মীরা।
এতে আহত হন সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুজাউল ইসলাম, বাংলানিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের ইমরান আহমেদ, কালের কণ্ঠের জসিম রেজা, সমকালের আল-আমীন, সকালের খবরের তানভীর রায়হান, দৈনিক দিনকালের নুরুল ইসলাম নীরবসহ প্রায় ১৫ জন সাংবাদিক।
এ ঘটনার বিচার চাইতে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে উপাচার্য মিজানুর রহমানের দফতরে যান সাংবাদিকেরা। সেখানে তারা উপাচার্যের সাক্ষাত পেতে তার সভাকক্ষে অপেক্ষাকালে নিজ কর্মীদের নিয়ে উপস্থিত হন শরিফুল।
এ সময় তিনি বলতে থাকেন, ‘দুই একটা সাংবাদিকের গলা কেটে ফেললে কিছুই হবে না। এটা আমার কেন্দ্র থেকে নির্দেশ দেওয়া আছে।’
এর পরপরই কানন, রিয়েন, রাসেল, সাইমন, আসাদ, মামুন ও রনিসহ শরিফুলের কর্মী অর্ধশতাধিক কর্মী ভিসির সভাকক্ষে উপস্থিত সাংবাদিকদের মারধর শুরু করে। এসময় সহকারী প্রক্টর নাসির উদ্দিন সাংবাদিকদের হামলা থেকে রক্ষার চেষ্টা করলে তাকেও লাঞ্ছিত করে ছাত্রলীগ কর্মীরা।
সাংবাদিকরা অভিযোগে করেছেন, উপাচার্যের পাশের কক্ষে আক্রান্ত হলেও তাদের রক্ষা করতে নিজ কক্ষ থেকে বের হননি উপাচার্য অধ্যাপক মিজানুর রহমান। ছাত্রলীগের হামলার ব্যাপারে সাংবাদিক সমিতির সভাপতি কাজী মোবারক বলেন, ‘ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে সাংবাদিক সমিতির পক্ষ থেকে উপাচার্য বরাবর লিখিত আবেদন করা হয়েছে।