adv
২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ধর্ষণ চেষ্টার মামলায় আসামির পরিবর্তে জেল খাটছেন অন্যজন

RAPEডেস্ক রিপাের্ট : গাইবান্ধায় আট বছরের এক শিশু কন্যাকে ধর্ষণ চেষ্টার মামলায় আসামির বদলে একজন নিরপরাধ রিকশা চালককে জোরপূর্বক আসামি সাজিয়ে গত নয়দিন ধরে কারাভোগ করাচ্ছেন প্রকৃত আসামীর বড় ভাই। গত ১০ এপ্রিল জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে এঘটনা ঘটে। সেদিন থেকেই কারাভোগ করছেন ওই রিকশা চালক। তবে বিষয়টি সোমবার স্থানীয় সাংবাদিকদের নজরে আসে।
মামলার মূল আসামি গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার নলছিয়া গ্রামের মৃত মইচ উদ্দিন শেখের ছেলে নজরুল ইসলাম। কারাভোগে থাকা নিরপরাধ রিকশা চালকের নাম মোজাফফর রহমান। তার বাড়িও নলছিয়া গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের মৃত ছিদ্দিক বেপারির ছেলে।
মোজাফফরের স্ত্রী সেলিনা বেগম বলেন, দশ বছর ধরে ঢাকার মগবাজারে তার স্বামী মোজাফফর রিকশা চালান। ছেলের এইচএসসি পরীক্ষার কারণে গত ১ এপ্রিল বাড়িতে আসেন তিনি। ১০ এপ্রিল মামলার আসামি নজরুলের বড় ভাই মজনু মিয়া তার স্বামীকে এসে বলেন যে তার বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে। তাই তাকে গাইবান্ধা যেতে হবে। মজনু সিএনজি যোগে তাকে গাইবান্ধায় নিয়ে যায়। পরে তার স্বামীকে বুঝানো হয় মামলায় তার নাম ভুলে নজরুল ইসলাম ও বাবার নাম মইচ উদ্দিন লেখা হয়েছে। আদালতে নজরুল নাম ডাকলেই সে যেন হাজির হয়। এরপর তার স্বামীকে কারাগারে পাঠানো হয়।
সেলিনা বেগম আরো বলেন, আমার স্বামীর ভোটার আইডি কার্ডে নাম মোজাফফর রহমান ও বাবার নাম মৃত ছিদ্দিক বেপারী ও গ্রাম নলছিয়া লেখা রয়েছে। আমার স্বামী কোন অপরাধ করেনি। এছাড়া কোথাও তার বিরুদ্ধে কোন মামলা মোকদ্দমা নেই। আমি আমার স্বামীর মুক্তি চাই।
মামলার বাদিপক্ষের আইনজীবী আবু বকর সিদ্দিক বলেন, রিকশা চালক মোজাফফর রহমানকে নজরুল ইসলাম সাজিয়ে আদালতে আত্মসমর্পন করে জামিনের আবেদন করলে বিচারক আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এরপর ১১ এপ্রিল একই আদালতে জামিনের আবেদন জানানো হলে আদালত সেটিও নামঞ্জুর করেন। এরপর থেকে মোজাফ্ফর কারাগারে রয়েছেন।
মামলার বিবরণে উল্লেখ করা হয়, ২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর দুপুরে সাঘাটা উপজেলার নলছিয়া গ্রামের আট বছরের এক শিশুকন্যাকে একই গ্রামের মৃত মইচ উদ্দিন শেখের ছেলে নজরুল ইসলাম জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করে। এ ঘটনায় শিশুটির মা বাদি হয়ে ৬ জানুয়ারি গাইবান্ধা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন। আদালত সাঘাটা থানা পুলিশকে মামলা তদন্তের নির্দেশ দেন। পরে সাঘাটা থানা পুলিশ ঘটনাটি মিথ্যা বলে ৮ ফেব্রুয়ারি আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে। ওই বছরের ৩ মার্চ বাদি ওই প্রতিবেদনের ওপর আদালতে নারাজির আবেদন করেন।
পরে আদালত ঘটনাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন। বিচারিক হাকিম ঘটনার সত্যতা পেয়ে ২৯ মার্চ আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। এরপর আদালত নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। এরপর থেকে আসামি নজরুল ইসলাম পলাতক রয়েছেন।
এদিকে গতকাল সোমবার আসামি নজরুল ইসলাম ও তার ভাই মজনুর বাড়িতে গিয়ে কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। ঘটনার পর থেকে বাড়ির সবাই গাঢাকা দিয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা। 

আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) শফিকুল ইসলাম বলেন, আইনজীবীদের সব আসামি চিনে রাখা সম্ভব হয় না। এ ছাড়া ১০ এপ্রিলের ওই ঘটনাটি আমাদের নজরে আসেনি। তবে এমনটা হয়ে থাকলে বাদির মাধ্যমে মূল আসামি চিহ্নিত করে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে।

জয় পরাজয় আরো খবর

adv
সর্বশেষ সংবাদ
সাক্ষাতকার
adv
সব জেলার খবর
মুক্তমত
আর্কাইভ


বিজ্ঞাপন দিন

adv

মিডিয়া