তোফায়েল বললেন -সার্চ কমিটিকে বিতর্কিত করলে বিএনপিরই ক্ষতি
নিজস্ব প্রতিবেদক : নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে সার্চ কমিটিকে শুরুতেই বিতর্কিত করলে বিএনপিরই ক্ষতি হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।
সচিবালয়ে বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত মাসাতো ওয়াতানাবির সঙ্গে বৈঠক শেষে সংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্যান্য কমিশনার নিয়োগের মাধ্যমে নতুন কমিশন গঠনে সুপারিশ দিতে বুধবার সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে ৬ সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করেছেন রাষ্ট্রপতি।
বিএনপি এ কমিটির সমালোচনা করে বলেছে, এ কমিটি কি কমিশন দেবে তা বোঝাই যাচ্ছে।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘আমি তো মনে করি যে নিরপক্ষে সার্চ কমিটি গঠন করা হয়েছে। এখন আমরা কোথা থেকে লোক খুঁজে আনব। যেটিই মহামান্য রাষ্ট্রপতি করেছেন সেটার এভাবে বিরোধিতা করা বিএনপির জন্য উচিত হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘আমি তো জানি এই সার্চ কমিটি যাদেরকে পরবর্তীকালে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বা কমিশনার করার জন্য নাম প্রস্তাব করবে তার মধ্য থেকে অনধিক পাঁচজনকে নিয়ে তিনি নির্বাচন কমিশন পু্নর্গঠন করবেন। সেই নির্বাচন কমিশনের অধীনেই বিএনপি নির্বাচন করবে, এটা আমার ধারণা ও দৃঢ় বিশ্বাস।’
‘শুরুতেই এটাকে বিতর্কিত করলে ক্ষতিটা কিন্তু বিএনপিরই হবে। কারণ পরবর্তীকালে দেখা যাবে যেটাকে বিতর্কিত করেছেন তার কার্যকলাপের অধীনেই তারা নির্বাচনে গেছেন।’
আওয়ামী লীগ আবার ৫ জানুয়ারির মত নির্বাচন করতে চায় বলে ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্য ঠিক না জানিয়ে তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘গত নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় বিএনপির কত ক্ষতি হয়েছে এটা আজকে বিএনপি প্রকাশ না করলেও সেটা মর্মে মর্মে তারা উপলব্ধি করে। আমাদের সাথে যখন ব্যক্তিগত আলাপ-আলোচনা হয় তখন তারা বলে যে কি ক্ষতিগ্রস্থ তারা হয়েছে। এবারের নির্বাচন তাদের করতে হবে। নির্বাচন না করলে তাদেরই ক্ষতি হবে।’
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সেই নির্বাচনকে বিতর্কিত করে, সে বিতর্কিত নির্বাচনে অংগ্রহণ করা কি তাদের (বিএনপি) ঠিক হবে। আবার কি তারা সেই ১৪ সালের মত করবে? নির্বাচন তো হবেই বাংলাদেশে। সেজন্য আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ সবারই সতর্কতার সাথে কথা বলা উচিত।’
জাপানের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘জাপান বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে অর্থায়ন করে। জাপানের ২৪০টিরও বেশি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে কাজ করছে।’
জাপানে বাংলাদেশের রফতানি এক বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে জানিয়ে তোফায়েল আহমেদ বলেন, জাপান বাংলাদেশে এক দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার রফতানি করে। দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য দুই দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার এবং প্রতি বছরই তা বাড়ছে।’
জাপানি বিনিয়োগকারীদের জন্য একটা বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্দিষ্ট করে দেওয়া হবে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘চীন, জাপান, ভারত, দক্ষিণ কোরিয়াসহ বিভিন্ন দেশকে আমরা একটি করে অঞ্চল দিতে চাই। জাপানের বিনিয়োগকারীরাও বাংলাদেশে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এদেশে বিনিয়োগ করলে আমরা তাদের বিভিন্ন সুবিধা দেব। জাপান আমাদের দুটি পণ্য ছাড়া সব পণ্যে শুল্কমুক্ত বাণিজ্য সুবিধা দিয়েছে।’
এখন বাংলাদেশের অবস্থা সম্পূর্ণ স্বাভাবিক দাবি করে বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ তোফায়েল বলেন, ‘কয়েকটি জায়গায় যে সস্ত্রাসী কার্যকলাপ, জঙ্গি তৎপরতা হয়েছিল সেটা আমরা নির্মূল করতে সক্ষম হয়েছি। বাংলাদেশে এখন অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে শান্তিপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করছে। কালো অন্ধকারটা কেটে গেছে।’