সাব্বিরে স্বপ্ন বাংলাদেশের
ক্রীড়া প্রতিবেদক : কী হবে কাল (সোমবার), কেউ জানে না। তবে জয়ের পাল্লাটা যে ইংল্যান্ডের দিকে ঝুকে আছে, সেটা স্পষ্ট। কিন্তু স্বাগতিকরা ভাগ্যের দিকে তাকিয়ে। এতোসব বিশ্লেষণের প্রয়োজন ছিলো না, যদি না মুশফিক আউট হতো। দলপতির বিদায়ের পর চট্টলার গ্যালারিতে শুনশান নীরবতা। তারপরেও আশা বাঁচিয়ে রাখলেন মুশফিকের পার্টনার সাব্বির রহমান। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে এই টেস্ট যদি বাংলাদেশ হেরেও যায়, তবু টেস্টটার কথা অবশ্যই অনেক দিন মনে রাখবে এ দেশের ক্রিকেট ভক্তরা। বাংলাদেশ এমন রোমাঞ্চকর টেস্ট খেলেছেই হাতে গোনা। তবে আজকের দিনটা কি আনন্দের স্মৃতি হয়ে থাকবে, নাকি আক্ষেপে বিষাদে ভরে দেবে চট্টগ্রাম টেস্টের শেষ দিন। এই টেস্টে প্রত্যাশা আর বাস্তবতা যদি না মিলে, তাহলে এটাও হয়ে থাকবে আরেক মুলতান টেস্টের আক্ষেপ।
মুলতান টেস্টে বাংলাদেশের মুঠো থেকে জয় ছিনিয়ে নিয়েছিলেন পাক অধিনায়ক ইনজামাম উল হক। ওই মুলতানের স্মৃতিই যেনো ভর করছে বাংলাদেশের কাঁধে। চট্টলা টেস্টে ৯৩ বলে ৫৯ রানে অপরাজিত সাব্বিরকে এখন নিতে হবে ভূমিকা। যদিও নবম উইকেটের জুটিটায় ১১ রানই এনে দিয়েছেন তাইজুল। কিন্তু আজকের মহা গুরুত্বপূর্ণ সকালে আসল ভূমিকা নিতে হবে সাব্বিরকেই।
পঞ্চম দিনে গড়ানো এই টেস্ট জয় থেকে বাংলাদেশ ৩৩ রান দূরে। জয়ের আরো কাছে ইংল্যান্ড। তাদের প্রয়োজন দুটি মাত্র উইকেট। সব জবাব মিলবে ২৪ অক্টোবর পঞ্চম দিনের প্রথম সেশনেই। চট্টগ্রাম টেস্টে জয়ের জন্য বাংলাদেশকে ২৮৬ রানের লক্ষ্য দেয় ইংল্যান্ড। রোববার চতুর্থ দিন শেষে জয় থেকে খানিকটা দুরত্বে অবস্থান করছে টাইগাররা। ৮ উইকেটে ২৫৩ রান তুলে ফেলেছে বাংলাদেশ। জয়ের জন্য দরকার আর মাত্র ৩৩ রান। সাব্বির ৫৯ ও তাইজুল ১১ রান নিয়ে সোমবার সকালে ব্যাটিংয়ে নামবেন।
রোববার সকালে তৃতীয় দিনে করা ২৭৩ রান লিডের সাথে আর মাত্র ১২ রান যোগ করেই অলআউট হয় সফরকারীরা। ফলে বাংলাদেশের লক্ষ্য দাড়ায় ২৮৬। বড় জয়ের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে ঘূর্ণী উইকেটে শুরুটা ভালোই করে বাংলাদেশ। তবে দশম ওভারে মঈন আলীর বলে গ্যারি ব্যালেন্সকে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান তামিম ইকবাল। ৯ রান করেন তিনি। এরপর দলীয় ৮১ রানে রশীদের বলে রুটের তালুবন্দী হন ইমরুল কায়েস। ৬১ বলে ৪৩ রান করে তাবুতে ফিরেন তিনি। লাঞ্চের পর তৃতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ। দারুণ খেলতে থাকা মমিনুলকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন গ্যারেথ বাটি। আম্পায়ার ধর্মসেনা অবশ্য আউট দেননি, পরে রিভিউয়ের সিদ্ধান্ত যায় ইংলিশদের পক্ষে। ২৭ রান করেন মমিনুল। নিজের পরের ওভারে মাহমুদউল্লাহকেও ফিরিয়ে দেন গ্যারেথ বাটি। রিয়াদ অবশ্য রিভিউ নেন। তবে আউট হওয়া থেকে বাঁচতে পারেননি তিনি। ১৭ রান করেন মাহমুদউল্লাহ।
দলীয় ১৪০ রানে পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে মঈন আলীর শিকার হন সাকিব। ৩৯ বলে ২৪ রান করেন দেশের এই শীর্ষ ব্যাটসম্যান। তবে এরপর উইকেটে এসেই ইংলিশ বোলারদের ওপর পাল্টা আক্রমণ চালান সাব্বির রহমান। চা বিরতির আগে মুশফিককে নিয়ে ৩৯ রানের জুটি গড়েন সাব্বির। চা বিরতি থেকে ফিরেও আস্থার সাথে ব্যাটিং করেন এই দুই ব্যাটসম্যান। দলীয় ২২৭ রানে বাটির বলে গ্যারি ব্যালেন্সকে ক্যাচ দিয়ে পাভিলিয়নে ফিরে যান মুশফিক। জয় থেকে তখনো ৫৯ রানে দূরে বাংলাদেশ।
তবে মুশফিক ফেরার পরই অভিষেক টেস্টে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন সাব্বির। দলীয় ২৩৪ রানে সাব্বিরকে একা রেখে ব্রডের দারুণ ইনসুংগারে লেগ বিফোর হয়ে ফিরে যান মেহেদী হাসান মিরাজ। এর মাত্র দুই রান ব্যবধানে আউট হন পেসার কামরুল ইসলাম রাব্বি। এবারো সেই ব্রড। তবে এরপর আর কোনো দুর্ঘটনা ঘটতে দেননি সাব্বির ও তাইজুল।