ভারতে এক বছরে ধর্ষণের শিকার ১০ হাজার শিশু
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতে ২০১৫ সালে ধর্ষণের শিকার হয়েছে অন্তত ১০ হাজার শিশু। সাম্প্রতিক সময়ে দুটি চাঞ্চল্যকর ধর্ষণের ঘটনা ভারতে নারী ও শিশুদের কঠিন অবস্থানকে তুলে ধরেছে। ইউনিসেফ ও ভারত সরকারের দেওয়া তথ্যে কিছু ভয়ংকর বিষয় উঠে আসে। সেসব তথ্যসূত্রের আলোকে বিবিসিতে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে জানা যায় ২০১৫ সালে ভারতে ধর্ষণের শিকার হয়েছে অন্তত ১০ হাজার শিশু।
ইউনিসেফ ও ভারত সরকারের তথ্যের বরাতে আরও জানা যায় প্রতি ১৫৫ মিনিটের মধ্যে ১৬ বছরের কমবয়সী একটি শিশু ধর্ষণের শিকার হয় আর প্রতি ১৩ ঘন্টায় ১০ বছরের কম বয়সী একটি শিশু ধর্ষণের শিকার হয়।
১৮ বছরের কম বয়সে বিয়ে হয়েছে এমন নারীর সংখ্যা ভারতে ২৪০ মিলিয়ন (২৪ কোটি)।
শিশু ধর্ষকদের বেশিরভাগই তাদের পূর্বপরিচিত হয়ে থাকে। অন্তত ৫০% এমন লোক হন যারা পরিবারের নিকটবর্তী ও সেবাদানকারী লোক হয়ে থাকেন।
সম্প্রতি চাঞ্চল্যকর ধর্ষণের ঘটনায় ১০ বছর বয়সী এক শিশু গর্ভবতী হয়ে যায়। তার গর্ভধারণের পেছনে মেয়েটির চাচা দায়ী বলে জানা যায়। গত সাত মাসে বেশ কয়েকবার সেই চাচার হাতে ধর্ষিত হয়েছে শিশুটি। পুলিশ সেই ধর্ষককে গ্রেফতার করেছে।
হাসপাতালে পেট ব্যাথার পরীক্ষা করতে গেলে মেয়েটির গর্ভধারণের বিষয়টি ধরা পরে। মেয়েটি বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে পেট ব্যাথার কথা বলে আসছিলো। হাসপাতালে পরীক্ষার পর গর্ভধারণের বিষয়টি ধরা পরে।
অপর একটি ধর্ষণের ঘটনায় গত ১০ মাস ধরে ক্লাস টেন পড়ুয়া এক কিশোরীকে তারই প্রতিবেশী বেশ কয়েকবার ধর্ষণ করেছিল। এতে সে গর্ভবতী হয়ে পড়ে।
অভিযুক্ত ব্যক্তি হল দিল্লির বাসিন্দা ৫১ বছরের এক অটোচালক আব্দুল গফর। ওই ছাত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে শুক্রবার বিহার থেকে তাকে আটক করা হয়।
পুলিশকে ওই কিশোরী জানিয়েছে, অভিযুক্ত তাকে ভয় দেখিয়ে গত ১০ মাসে চার থেকে পাঁচবার ধর্ষণ করে এবং প্রতিবারই ধর্ষণ করার পর তার মুখ বন্ধ রাখতে ৫০০-৮০০ টাকাও দিত। কাউকে জানালে তাকে প্রাণে মারারও হুমকি দেয় বলে অভিযোগ।
ওই কিশোরী যে অন্তঃস্বত্ত্বা তা একেবারেই টের পাননি তার বাবা ও মা। বেশ কিছুদিন ধরেই তার পেটে অসম্ভব যন্ত্রণা হচ্ছিল, সে কথা মেয়েটি তার মা-বাবাকে জানালেও তারা ততটা গুরুত্ব দেননি। তারা ভেবেছিলেন হয়তো অম্বলের সমস্যার জন্য পেটে ব্যথা হচ্ছে।
গত সপ্তাহে স্কুলের ভেতর সন্তানের জন্ম দেওয়ার পর স্কুল কর্তৃপক্ষ পুলিশকে বিষয়টি জানানোর পরই আসল সত্যটা সামনে আসে। পুলিশের কাছে গফুর গোটা ঘটনাটি স্বীকার করেছে।
শিশু ও স্কুলছাত্রী ধর্ষণের শিকার হওয়া ও গর্ভবতী হওয়ার বিষয়টি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে সেখানকার নারী ও শিশুরা কেমন কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছে।