স্কুলছাত্রের সাজা বাতিল করে ম্যাজিস্ট্রেট-ওসিকে প্রত্যাহারের নির্দেশ দিলেন হাইেকার্ট
নিজস্ব প্রতিবেদক : টাঙ্গাইল-৮ আসনের সংসদ সদস্য অনুপম শাজাহান জয়কে নিয়ে ফেইসবুকে মন্তব্য করার অভিযোগে স্কুলছাত্রকে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে দেয়া সাজা বাতিল করেছে হাইকোর্ট। তাকে সাজা ঘোষণা করা ম্যাজিস্ট্রেট টাঙ্গাইলের সখিপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং সখিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)কে প্রত্যাহারের নির্দেশও দিয়েছে আদালত।
ঘটনাটির বিচার বিভাগীয় তদন্তের আদেশ দেয়া হয়েছে। টাঙ্গাইলের মুখ্য বিচারিক হাকিমকে এই তদন্ত করতে হবে। মঙ্গলবার দুপুরে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি আশিষ রঞ্জন দাসের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
ঘটনাটি আদালতের সামনে নিয়ে আসা আইনজীবী খুরশীর আলম জানান, সখিপুর থানার ওসি ও ইউএনওকে প্রত্যাহার করে ঢাকা বিভাগের বাইরে বদলি করতে হবে।
টাঙ্গাইল-৮ আসনের সাংসদ অনুপম শাহজাহানকে নিয়ে সাব্বিরের একটি মন্তব্যের জেরে ১৭ সেপ্টেম্বর স্কুলশিক্ষার্থী সাব্বিরকে দুই বছরের সাজা দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব পালনকারী সখিপুর ইউএনও।
২০ সেপ্টেম্বর একটি ইংরেজি দৈনিকে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সেই প্রতিবেদনের কপি আইনজীবী খুরশীদ আলম খান আদালতের নজরে আনেন। এরপর বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাসের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে সখিপুরের ইউএনও ও ওসির কাছে ব্যাখ্যা চায়। একইসঙ্গে কারাদণ্ডপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষার্থীকে আদালত জামিনে মুক্তির নির্দেশ দেয় আদালত।
পত্রিকার প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, টাঙ্গাইলের সখিপুরে প্রতীমা পাবলিক হাই স্কুলের শিক্ষার্থী সাব্বির শিকদারকে গত ১৭ সেপ্টেম্বর ইউএনও রফিকুল ইসলাম ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দুই বছরের কারাদণ্ড দেন।
এর আগের দিন টাঙ্গাইল-৮ (বাসাইল-সখিপুর) আসনের সাংসদ অনুপম শাজাহান জয় ওই বালকের বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি করেন। দণ্ড প্রদানের পর সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ওই বালককে টাঙ্গাইল জেলা কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
প্রতিবেদনে জিডির বরাত দিয়ে ওসি বলেন, সাব্বির সাংসদ অনুপম শাহজাহানকে মেসেঞ্জারে হুমকি দিয়েছে যে, ‘আপনার সময় ফুরিয়ে আসছে’। আর ম্যাজিস্ট্রেট সূত্রে উল্লেখ করা হয়, তাকে তথ্য প্রযুক্তি আইনে এই দণ্ড দেওয়া হয়েছে।
গত ২৭ সেপ্টেম্বর সাব্বির হাইকোর্টে এসে তার ওপর নির্যাতনের বর্ণনা দেয়। সাব্বির জানায়, ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে বিচার করার দিন রাত নয়টায় এসে তাকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। আর ইউএনও তাকে বুকে লাথি দিয়ে ফেলে দেয়। কেঁদে কেঁদে এই ঘটনার বিচারও চায় সে।
আইনজীবী খুরশিদ আলম খান ঢাকাটাইমসকে বলেন, আদালতে দেয়া সাব্বিরের বক্তব্য অভিযোগ হিসেবে গ্রহণ করে তার বিচার বিভাগীয় তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে সাব্বিরের দুই বছরের সাজা বাতিল করা হয়েছে।