কলম্বিয়ায় ফার্ক শান্তি চুক্তির বিপক্ষে গণরায়
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ফার্ক গেরিলাদের সঙ্গে কলম্বিয়া সরকারের করা 'ঐতিহাসিক' শান্তিচুক্তি প্রত্যাখ্যান করেছে দেশটির জনগণ।
রোববার অনুষ্ঠেয় গণভোটে চুক্তির বিপক্ষে ৫০ দশমিক ২৪ শতাংশ ভোট পড়েছে। খবর বিবিসির।
দীর্ঘ চার বছর আলোচনার পর গত সপ্তাহে দেশটির মধ্য-ডানপন্থী সরকারের প্রধান ম্যানুয়েল সান্তোস ও দ্য রেভল্যুশনারি আর্মড ফোর্সেস অব কলম্বিয়ার (ফার্ক) নেতা টিমোশেনকো চুক্তিতে সই করেন।
চুক্তিটি আনুষ্ঠানিকভাবে বাস্তবায়িত হতে জনগণের 'সম্মতি'র দরকার ছিল। সেজন্যই গণভোটের আয়োজন করা হয়েছিল।
কিন্তু মাত্র ৩৭ শতাংশ ভোটার এই গণভোটে অংশ নেন। ১ কোটি ৩০ লাখ ব্যালটের মধ্যে ৬৩ হাজারেরও কম ভোটের ব্যবধানে শান্তি চুক্তিটি 'প্রত্যাখ্যাত' হয়।
গণভোটের পর জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে প্রেসিডেন্ট ম্যানুয়েল সান্তোস বলেছেন, 'জনগণের রায় গ্রহণ করেছি। কিন্তু শান্তি প্রতিষ্ঠায় প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।'
তিনি বলেন, 'ফার্ক ও সরকারি বাহিনীর মধ্যে চলমান 'যুদ্ধবিরতি' অব্যাহত রেখেই মধ্যস্থতাকারীদের দ্রুত কিউবা গিয়ে ফার্ক নেতাদের সঙ্গে পরবর্তী প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।'
ম্যানুয়েল সান্তোস আরও বলেন, 'আমি হাল ছাড়ছি না। দায়িত্ব ছাড়ার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত শান্তির জন্য কাজ করে যাব। কেন না এই পথেই আমাদের শিশুদের জন্য একটি ভাল দেশ রেখে যাওয়া সম্ভব।'
ফার্ক নেতা টিমোশেনকোও বলেছেন, তার দল এখনও যুদ্ধের সমাপ্তি টানতে অঙ্গীকারাবদ্ধ।
গেরিলা এ দলটি এরআগে পাঁচ দশক ধরে চলা যুদ্ধ থামিয়ে অস্ত্র সমর্পণ ও ছয় মাসের মধ্যে প্রকাশ্য রাজনৈতিক দল গঠনের ইচ্ছা প্রকাশ করেছিল।
সমালোচকদের দাবি, শান্তি চুক্তিতে ফার্কের গেরিলা বাহিনীকে বেশি 'ছাড় দেয়া হয়েছে' বলে মনে করছে কলম্বিয়ার জনগণ।
চুক্তিতে জেলে থাকা অনেক গেরিলাকেই ছেড়ে দেয়ার কথা বলা হয়েছে, যাদের বিরুদ্ধে অসংখ্য মানুষকে হত্যা ও নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে।
শান্তি চুক্তির বিরোধিতাকারীদের অন্যতম সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ফান্সিসকো সান্তোস বলেছেন, আরও ভাল চুক্তি করার জন্যই জনগণ এ রায় দিয়েছে।
তিনি বলেন, 'ন্যায়বিচারের সঙ্গে শান্তির জয়ের জন্যই 'না'র এ জয়। এ জয় ক্ষমা ও পুনর্মিলনের সঙ্গে শান্তির জয়। এ গণরায় আরও স্থিতিশীল শান্তি, যেখানে আমাদের সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত হবে তাকে ত্বরান্বিত করবে।'
গণভোটের এ রায়ের ফলে প্রেসিডেন্ট সান্তোসকে এখন 'কঠিন সময়' পার করতে হবে বলে মনে করছেন বিবিসির আমেরিকাবিষয়ক সম্পাদক লিওনার্দো রোকা।
তিনি বলেন, 'অন্য কোনো বিকল্প না থাকার ব্যাপারে সান্তোস যে কথা বলেছিলেন, এখনও যদি তিনি তাতে অটল থাকেন তাহলে দ্বিপক্ষীয় যুদ্ধবিরতি বাতিল হয়ে যেতে পারে; নতুন করে দামামা বেজে উঠতে পারে।'