adv
২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

রপ্তানির জন্য অনন্য সম্মান

feature3_127105_0ডেস্ক রিপাের্ট : রপ্তানিখাতে অবদানের জন্য নির্বাচিত শিল্পোদ্যোক্তাদের ২৮ আগস্ট ‘রপ্তানি ট্রফি’ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাজধানী ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) আয়োজনে ২০১১-২০১২ ও ২০১২-২০১৩ অর্থবছরের শীর্ষ রপ্তানিকারকদের সম্মাননা ও স্বীকৃতি দেওয়া হয়।

রপ্তানির নতুন বাজার চান প্রধানমন্ত্রী-

সীমিত পণ্যের ওপর নির্ভরতা কাটানোর পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের নতুন নতুন বাজার খুঁজে বের করার তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতীয় রপ্তানি ট্রফি বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি আরো বলেন, ‘সীমিত পণ্যের ওপর দেশের রপ্তানি নির্ভরতা রপ্তানি বাণিজ্যের অন্যতম দুর্বলতা।’ ‘রপ্তানি বাণিজ্যের এ সমস্যা দূর করার জন্য পণ্য তালিকায় নতুন নতুন পণ্যের সংযোজন এবং কম অবদান রাখছে এমন পণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধির প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’ এজন্য ব্যবসায়ীদেরও উদ্যোগী হতে বলেন সরকারপ্রধান।

‘আপনারা নতুন নতুন বাজার খুঁজে বেড়ান। কোন দেশে কী বাজার আছে। রপ্তানি পণ্যের বহুমুখীকরণ করতে হবে।’

অধিক মূল্য সংযোজিত পণ্য উৎপাদনে ও দেশজ কাঁচামাল নির্ভর রপ্তানি পণ্য উৎপাদনে ব্যবসায়ীদের মনোনিবেশ করার অনুরোধও জানান প্রধানমন্ত্রী। রপ্তানি উন্নয়নে সম্ভাব্য সব খাতে ২০৪১ সালকে লক্ষ্য ধরে রোডম্যাপ প্রণয়ন করা হচ্ছে বলেও তিনি তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন। এই অনুষ্ঠানে ‘রূপকল্প ২০২১’ ঘোষণার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০০৯ সালে আমরা যখন দায়িত্ব গ্রহণ করি তখন বিশ্বব্যাপী মন্দা থাকা সত্ত্বেও বিগত সাড়ে সাত বছরে মাথাপিছু আয় বেড়ে প্রায় ১ হাজার ৪৬৬ মার্কিন ডলার হয়েছে।’

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরো বলেন, রপ্তানি বাণিজ্যের সহায়তায় গত সাত বছরে প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। ২০০৫-০৬ অর্থবছরে নগদ সহায়তার পরিমাণ ছিল ৬০২ কোটি টাকা। গত ২০১৪-১৫ অর্থবছরে চার হাজার কোটি টাকা নগদ সহায়তা দেওয়া হয়। ২০২১ সালে দেশের রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। শুধু তৈরি পোশাক খাতেই ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও রপ্তানি পণ্য প্রদর্শনীর জন্য চীনের সহায়তায় মুন্সিগঞ্জ জেলার বাউশিয়াতে প্রায় ৫৩১ একর জমির ওপর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্র নামে একটি অত্যাধুনিক গার্মেন্টস শিল্প পার্ক নির্মাণ প্রক্রিয়াধীন থাকার কথাও বলেন শেখ হাসিনা।

বাণিজ্যমন্ত্রীর লক্ষ্য ইউরোপ-আমেরিকার বাজার-

বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, রপ্তানিপণ্যের বাজার সম্প্রসারণের জন্য সরকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ভবিষ্যতে ইউরোপ-আমেরিকার বাজারে রপ্তানি বাড়াতে নগদ সহায়তার হার বাড়ানো হবে। আমরা ব্যবসায়ীদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করার চেষ্টা করছি। অনুষ্ঠানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. তাজুল ইসলাম চৌধুরী, বাণিজ্যসচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন ও ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান মাফরুহা সুলতানা বক্তব্য দেন। এফবিসিসিআই সভাপতি মাতলুব আহমাদ রপ্তানিখাতে অবদানের জন্য প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি ব্যবসায়ী সংগঠনকেও স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানান।

রপ্তানির জন্য অনন্য সম্মান-

২০১১-১২ অর্থবছরে পদক পায় ৫১ প্রতিষ্ঠান

২০১১-১২ অর্থবছরের জন্য স্বর্ণপদক দেওয়া ২৪টি প্রতিষ্ঠান হলো- জাবের অ্যান্ড জোবায়ের ফেব্রিকস, হামীম গ্রুপের রিফাত গার্মেন্ট, স্কয়ার ফ্যাশনস, এপেক্স ফুডস, স্কয়ার টেক্সটাইলস, পপুলার জুট এক্সচেঞ্জ, আকিজ জুট, এপেক্স ট্যানারি, পিকার্ড বাংলাদেশ, এফবি ফুটওয়্যার, কারুপণ্য রংপুর, বেঙ্গল প্লাস্টিক, ফার সিরামিকস, ইউনিভার্সেল জিনস, শাশা ডেনিমস, রাজধানী এন্টারপ্রাইজ, মন ট্রিমস, নোমান উইভিং, এগ্রি কনসার্ন, প্রাণ এক্সপোর্টস, ইউনিগ্লোরী সাইকেল, তানভীর পলিমার, বেক্সিমকো ফার্মা ও সার্ভিস ইঞ্জিন।

রৌপ্য পদক দেওয়া ১৮টি প্রতিষ্ঠান হলো- অনন্ত অ্যাপারেলস, জিএমএস কম্পোজিট, মোশারফ কম্পোজিট, এনভয় টেক্সটাইল, সীমার্ক (বিডি), এফআর জুট, জনতা জুট, এসএফ ইন্ডাস্ট্রিজ, আরএমএম লেদার, ফার্ম ফ্রেশ, প্রাণ এগ্রো, ক্যাপিটাল এন্টারপ্রাইজ, কোর দ্য জুট ওয়ার্কস, এভারব্রাইট প্লাস্টিক, ট্রান্সওয়ার্ল্ড বাইসাইকেল, আল-হাবিব এন্টারপ্রাইজ, গ্রাফিকপিপল ও জিন্স-২০০০।  ব্রোঞ্জ পদকপ্রাপ্ত ৯টি প্রতিষ্ঠান হচ্ছে- সিনহা ইন্ডাস্ট্রিজ, ফোর এইচ ফ্যাশনস, ভিয়েলাটেক্স স্পিনিং, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল, কুলিয়ারচর সি ফুডস, রেজা জুট, করিম জুট, আল-আজমী ট্রেড ও প্রাণ ফুডস।

২০১২-১৩ অর্থবছরে পদক পায় ৬০ প্রতিষ্ঠান-

২০১২-২০১৩ অর্থবছরে বিশেষ অবদানের জন্য স্বর্ণপদক দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- জাবের অ্যান্ড জোবায়ের ফেব্রিকস, হামীম গ্রুপের রিফাত গার্মেন্ট, এপেক্স ফুডস, পপুলার জুট এক্সচেঞ্জ, আকিজ জুট, এপেক্স ট্যানারি, পিকার্ড বাংলাদেশ, এফবি ফুটওয়্যার, কারুপণ্য রংপুর, বেঙ্গল প্লাস্টিক, ফার সিরামিকস, ইউনিভার্সেল জিনস, শাশা ডেনিমস, রাজধানী এন্টারপ্রাইজ, মন ট্রিমস, জিএমএস কম্পোজিট, কামাল ইয়ার্ন, সাদ সান টেক্সটাইল, নোমান টেরিটাওয়েল, আল আজমী ট্রেড, প্রাণ ডেইরি, বিআরবি কেবল, মেরিন সেইফটি সিস্টেম, স্কয়ার ফার্মা, গ্রাফিকপিপল ও মীর টেলিক রৌপ্য পদক পাওয়া ১৯টি প্রতিষ্ঠান হলো অনন্ত অ্যাপারেলস, স্কয়ার ফ্যাশনস, বাদশা টেক্সটাইল, এনভয় টেক্সটাইল, ইউনিলায়েন্স টেক্সটাইল, সীমার্ক (বিডি), রেজা জুট, জনতা জুট, এসএফ ইন্ডাস্ট্রিজ, আরএমএম লেদার, লালমাই ফুটওয়্যার, মনসুর জেনারেল, প্রাণ এগ্রো, ক্যাপিটাল এন্টারপ্রাইজ, কোর দ্য জুট ওয়ার্কস, বেঙ্গল প্লস্টিক, সার্ভিস ইঞ্জিন, প্যাসিফিক জিন্স ও জাবের অ্যান্ড জোবায়ের এক্সেসরিজ।

ব্রোঞ্জ পদক পাওয়া ১৫টি প্রতিষ্ঠান হচ্ছে- অ্যাপারেল গ্যালারি, ইন্টারস্টফ অ্যাপারেলস, মোশারফ কম্পোজিট, তালহা ফেব্রিক, জালালাবাদ ফ্রোজেন ফুডস, উত্তরা জুট, সাদাত জুট, বেঙ্গল লেদার, এবিসি ফুটওয়্যার, ফুটবেড ফুটওয়্যার, এলিন ফুডস, প্রাণ ফুডস, হেলাল অ্যান্ড ব্রাদার্স, আরএফএল প্লাস্টিক ও ইউনিগ্লোরী পেপারস অ্যান্ড প্যাকেজিং।

টানা দুই দফা স্বর্ণজয়ী ১৫ প্রতিষ্ঠান-

রপ্তানিতে বিশেষ অবদানের জন্য পরপর দুবার ১৫টি প্রতিষ্ঠান স্বর্ণপদক পেয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- জাবের অ্যান্ড জোবায়ের ফেব্রিকস, হামীম গ্রুপের রিফাত গার্মেন্ট, এপেক্স ফুডস, পপুলার জুট এক্সচেঞ্জ, আকিজ জুট, এপেক্স ট্যানারি, পিকার্ড বাংলাদেশ, এফবি ফুটওয়্যার, কারুপণ্য রংপুর, বেঙ্গল প্লাস্টিক, ফার সিরামিকস, ইউনিভার্সেল জিনস, শাশা ডেনিমস, রাজধানী এন্টারপ্রাইজ ও মন ট্রিমস।

রপ্তানি আয়ে সেরা-

সর্বোচ্চ রপ্তানি আয়ের জন্য পরপর দুই বছরই স্বর্ণপদক পেয়েছে জাবের অ্যান্ড জোবায়ের ফেব্রিকস। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানটি সংশ্লিষ্ট খাতেও সর্বোচ্চ রপ্তানি আয়ের পুরস্কার পেয়েছে। ২০১১-১২ অর্থবছরে জাবের অ্যান্ড জোবায়ের ফেব্রিকস ১৭ কোটি ৮৩ লাখ ডলার আয় করে। ২০১২-১৩ অর্থবছরে তাদের আয় ছিল ১৬ কোটি ৯২ লাখ ডলার। প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে স্বর্ণপদক গ্রহণ করেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এস এম রফিকুল ইসলাম ও উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবদুল্লাহ জাবের।

১২ বার সেরা প্রাণ-

সর্বোচ্চ রপ্তানিকারক হিসেবে টানা ১২ বার ‘সেরা রপ্তানিকারক পদক’ পেল দেশের শীর্ষস্থানীয় খাদ্যপণ্য প্রক্রিয়াজাতকারী ও রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান প্রাণ। ২০১১-১২ এবং ২০১২-১৩ অর্থবছরের জন্য ৬টি পদক অর্জন করল দেশের অন্যতম এ শিল্পগোষ্ঠী। ২০১১-১২ অর্থবছরেও অ্যাগ্রো প্রসেসিং পণ্য রপ্তানিতে প্রাণ এক্সপোর্ট লিমিটেড, প্রাণ অ্যাগ্রো লিমিটেড ও প্রাণ ফুডস লিমিটেড যথাক্রমে স্বর্ণ, রৌপ্য ও ব্রোঞ্জ পদক লাভ করে। ২০১২-১৩ অর্থবছরে অ্যাগ্রো প্রসেসিং পণ্য রপ্তানিতে স্বর্ণ, রৌপ্য ও ব্রোঞ্জ তিন পদকই পেয়েছে প্রাণ গ্রুপ। এর মধ্যে প্রাণ ডেইরি লিমিটেড স্বর্ণপদক, প্রাণ অ্যাগ্রো লিমিটেড রৌপ্য ও প্রাণ ফুডস লিমিটেড ব্রোঞ্জ পদক অর্জন করে।

এ বছর রপ্তানিতে ট্রফি পাওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে পুঁজিবাজারে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে স্কয়ার টেক্সটাইলস, শাশা ডেনিমস, এনভয় টেক্সটাইল, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল, বেক্সিমকো ফার্মা, স্কয়ার ফার্মা, এপেক্স ফুডস এবং এপেক্স ট্যানারি। এর আগে ১৯৯৯-২০০০ অর্থবছরে অ্যাগ্রো প্রসেসিং পণ্য রপ্তানির জন্য প্রথমবারের মতো স্বর্ণ পদক পেয়েছিল প্রাণ গ্রুপ।

জয় পরাজয় আরো খবর

adv
সর্বশেষ সংবাদ
সাক্ষাতকার
adv
সব জেলার খবর
মুক্তমত
আর্কাইভ
September 2016
M T W T F S S
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
2627282930  


বিজ্ঞাপন দিন

adv

মিডিয়া