সালাউদ্দিনের সম্মিলিত পরিষদের ইস্তেহার
জহির ভূইয়া ঃ হোটেল পূর্বানীতে আজ বিকেলে বাফুফে নির্বাচনে নমিনেশন পেপার জমা দেয়া সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের সম্মিলিনত পরিষদের পক্ষথেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে নির্বাচনী ইস্তেহার ঘোষনা করা হয়। যদিও অনুষ্ঠানে সালাউদ্দিন স্বয়ং উপস্থিত ছিলেন না। ২৫টি পয়েন্টের উপর ভিত্তি করে তৈরি ইস্তেহারটি মিডিয়ার সামনে পড়ে শোনালেন সম্মিলিত পরিষদের প্রধান সমন্বয়ক তরফদার মোঃ রুহুল আমিন। ক্রীড়া পাঠকদের জন্য ইস্তেহারের ২৫টি পয়েন্ট তুলে ধরা হল।
কাজী মোঃ সালাহউদ্দিন এর নেতৃত্বাধীন সম্মিলিত পরিষদের আগামী দিনের সংক্ষিপ্ত নির্বাচনী ইসতেহারঃ
১। জাতীয় ফুটবল দলের সাফল্যের প্রয়োজনে দেশের সকল ক্লাবকে আর্থিক, কোচ দিয়ে অনুর্ধ-১৪, ১৬, ১৮ দল গঠণ করতে সহায়তা করা সহ নিয়মিত টুর্নামেন্টের আয়োজন।
২। জাতীয় দলের পাইপ লাইনে পর্যাপ্ত খেলোয়াড় তৈরী করার জন্য সিলেটস্থ বাফুফের ফুটবল একাডেমিকে বাফুফের সাথে প্রাইভেট ম্যানেজমেন্টের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদে আন্তর্জাতিক মানের ফুটবল একাডেমি গড়ে তোলা হবে। যাহার কার্যক্রম শুরু হবে আগামী জুন-জুলাই ২০১৬ থেকে শুরু হবে।
৩। বাফুফে ভবনে আন্তর্জাতিকমানের ফিটনেস সেন্টার গড়ে তোলা হবে, যা জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
৪। প্রতিটি বিভাগে পর্যায়ক্রমে ১টি করে ফুটবল টার্ফ মাঠ ফিফার সহায়তায় স্থাপন করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
৫। ফুটবলকে বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে দেয়ার লক্ষ্যে বাংলাদেশের সকল জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনকে শক্তিশালী করার জন্য প্রয়োজনমত আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হবে। যাতে করে ডিএফএ গুলো প্রয়োজনমত খেলোয়াড়দের প্রশিক্ষণ ও নিয়মিত লীগ পরিচালনা করতে পারে।
৬। এছাড়াও বাংলাদেশ সুপার লীগ (বিএসএল) এর কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত মোতাবেক সকল ডিএফএ কে প্রতিবছর ২,০০,০০০/- টাকা করে প্রদান করা হবে, যা দিয়ে প্রতিটি ডিএফএকে পর্যায়ক্রমে ফুটবল কোচিং সেন্টার গড়ে তোলার সহায়তা করা হবে।
৭। দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনায় খেলোয়াড় তৈরীর লক্ষ্যে পর্যায়ক্রমে সকল বিভাগীয় শহরসহ সকল জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সরকারী এবং বেসরকারী উদ্যোগে ফুটবল একাডেমি গড়ে তোলা হবে। যার ফলে দীর্ঘমেয়াদী প্রশিক্ষনের মাধ্যমে প্রকৃত দক্ষ খেলোয়াড় তৈরী করা হবে। যা বাংলাদেশের ফুটবলের উন্নতিতে ব্যাপক ভুমিকা রাখবে।
৮। এই সমস্ত ফুটবল একাডেমিগুলো পর্যায়ক্রমে ইউরোপ ও ল্যাতিন আমেরিকায় বিভিন্ন ফুটবল একাডেমির সাথে টিকনিক্যাল টাইআপ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
৯। সরকারী/বেসরকারী পৃষ্ঠপোষকতা নিয়ে সারা দেশ থেকে একটি নিরপেক্ষ কমিটির মাধ্যমে ১০ হতে ১১ বছরের ১৫০ জন খেলোয়াড়দের বাছাই করা হবে। এ সমস্ত খেলোয়াড়দের ১ বছর প্রাথমিক প্রশিক্ষণ দিয়ে তার মধ্য থেকে সেরা ৪০ জন খেলোয়াড়কে ইউরোপ বা ল্যাতিন আমেরিকার ফুটবল একাডেমিতে উন্নত প্রশিক্ষণের জন্য প্রেরণ করা হবে। যেখানে তারা লেখাপড়াসহ নিয়মিতভাবে ফুটবল প্রশিক্ষণ নিয়ে পরবর্তীতে বাংলাদেশসহ বিশ্বের যে কোন ক্লাবে খেলার উপযোগী হয়ে গড়ে উঠবে। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশের ফুটবল পর্যায়ক্রমে বিশ্বমানচিত্রে একটি ভাল অবস্থানে পৌঁছাবে।
১০। জাতীয় দলের জন্য আন্তর্জাতিক মান সম্পন্ন কোচ, গোলরক্ষক কোচ, ফিটনেস ইন্সট্রাক্টর, নিউট্রেশন এক্সপার্ট নিয়োগ দেয়া হবে।
১১। জাতীয় চ্যাম্পিয়নশীপ (শেরেবাংলা কাপ), জেলা, বিশ্ববিদ্যালয়, সম্মিলিত সামরিক বাহিনীসমূহের অংশগ্রহণের মাধ্যমে পুনরায় চালু করা। সে সাথে অ-১৯ (সোহরাওয়ার্দী কাপ) পুনঃ চালু করা হবে, জাতীয় ও যুব দলের খেলোয়াড়রা নিজ নিজ জেলার পক্ষে খেলার জন্য প্রয়োজনীয় বিধি রাখা হবে।
১২। নিয়মিতভাবে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ/শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাবকাপসহ অন্যান্য টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করা হবে।
১৩। ফ্রাঞ্চাইজি ফুটবল লীগ (বিএসএল) নিয়মিতভাবে ৮টি বিভাগীয় শহরে দেশী ও বিদেশী (ইউরোপ ও ল্যাতিন আমেরিকা) খেলোয়াড়দের সমম্বয়ে প্রতি বছর জানুয়ারী-মার্চে এর মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে। যাহা বাংলাদেশের দর্শকদের মাঠমুখী করাসহ খেলোয়াড় তৈরীতে ব্যাপক সহায়তা করবে। এই খেলাগুলো বিভাগীয় স্টেডিয়ামে হোম এন্ড এ্যাওয়ে ভিত্তিতে অনুষ্ঠিত হবে।
১৪। ফ্রাঞ্চাইজি ফুটবল লীগ (বিএসএল) অনুষ্ঠানের জন্য বিভাগীয় স্টেডিয়ামগুলোকে সরকারী ও বেসরকারী উদ্যোগে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করণের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্তা গ্রহণ করা হবে।
১৫। আমাদের দেশে প্রকট মাঠ সমস্যা (ঢাকা ও জেলায়) রয়েছে। সরকার, ডিএসএ ও ডিএফএ এর সমম্বয়ে বাফুফের মনিটরিং কমিটির মাধ্যমে প্রতিটি জেলায় প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক লীগ খেলার ব্যাপারে সহায়তা করা হবে।
১৬। বাফুফের সকল স্ট্যান্ডিং কমিটি, টুর্নামেন্ট কমিটিতে জেলা ও বিভাগের প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে। জেলার ফুটবল লীগের জন্য আর্থিক সহায়তাসহ মনিটরিং সেল থাকবে।
১৭। প্রতিটি বিভাগে বাফুফে লাইসেন্সধারী ফুটবল কোচ নিয়োজিত হবে। পার্বত্য অঞ্চলে পুরুষ ও মহিলা ফুটবল দল খেলোয়াড় সৃষ্টির লক্ষ্যে ২ জন কোচ সার্বক্ষনিকের জন্য নিয়োগ দেয়া হবে।
১৮। প্রতিবছর বাফুফে থেকে ১ লক্ষ ফুটবল সারাদেশে বিতরণের উদ্যোগ নেয়া হবে। সঠিকভাবে বিতরণ ও তা ব্যবহৃত হচ্ছে কিনা তার জন্য একটি মনিটরিং সেল থাকবে।
১৯। বাফুফে ভবনে সদস্য, ডেলিগেট, জেলা ও বিভাগীয় সংগঠকদের জন্য কক্ষ থাকবে।
২০। সকল জেলার ক্লাবগুলোর সমম্বয়ে ‘ক্লাব কাপ’ পুনরায় চালু করা হবে।
২১। সকল উপজেলা পর্যায়ে অন্ততঃ ১টি ফুটবল টুর্নামেন্ট (ইউনিয়ন ভিত্তিক) আয়োজনের মাধ্যমে প্রতিভাবান খেলোয়াড় নিয়ে দীর্ঘমেয়াদী প্রশিক্ষণ কর্মসূচীতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
২২। বাংলাদেশের কোচদের উন্নত প্রশিক্ষণের জন্য আন্তর্জাতিক খ্যতিমান কোচ আনা হবে। প্রয়োজনে তাদেরকে প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার জন্য বিদেশে পাঠানো হবে।
২৩। দেশের সকল রেফরীদেরকে উন্নত প্রশিক্ষনের জন্য বিদেশী অভিজ্ঞ রেফারী ইনস্ট্রাক্টর আনা হবে।
২৪। ফিফা ফ্রেন্ডলি ম্যাচ বছরে ৪/৫টি অনুষ্ঠানের উদ্যোগ নেয়া হবে।
২৫। জাতীয় দল, প্রশিক্ষণ গ্রহণকারী খেলোয়াড়, কর্মকর্তা ও কোচদের জন্য সম্মানীর ব্যবস্থা করা হবে ও খেলোয়াড়দের জন্য পুনরায় বীমা ব্যবস্থা চালু করা হবে।