adv
২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

বিএনপি পদত্যাগ চায় অর্থমন্ত্রী ও গভর্নরের

Rizvi1457693009নিজস্ব প্রতিবেদক : ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে ১০ কোটি মার্কিন ডলার লোপাটের ঘটনায় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আতিউর রহমানের পদত্যাগ দাবি করেছে বিএনপি।
 
রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ১১ মার্চ শুক্রবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘দেশের অর্থনীতিকে রাবিশে পরিণত করার জন্য অর্থমন্ত্রী ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর দায়ী। ৮০০ কোটি টাকা হ্যাক হয়ে যাওয়ার পরও তারা এখনো দায়িত্ব পালন করছেন কোন নৈতিক অধিকারে? অবিলম্বে অর্থমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের পদত্যাগ দাবি করছি।’
 
বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সর্বশেষ বিশাল অংকের অর্থ লোপাটের ঘটনায় দেশের আর্থিক খাতে ব্যাপক ধ্বস নামবে বলেও অর্থনীতিবিদদের উদ্ধৃতি দিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেন বিএনপির এই নেতা।
 
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকে বাংলাদেশের সঞ্চিত ১০ কোটি ডলার চীনা হ্যাকাররা হাতিয়ে নেয়। ফিলিপাইনের একটি সংবাদপত্র এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। তাতে বলা হয়, ব্যাংক চ্যানেলে ফিলিপাইনে ওই অর্থ নিয়ে সেখান থেকে ক্যাসিনোসহ একাধিক হাত ঘুরে অন্য দেশে নিয়ে যাওয়া হয় বাংলাদেশের এই অর্থ।
 
লোপাট হওয়া অর্থের একটি অংশ উদ্ধারের কথা সোমবারই জানায় বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে কী পরিমাণ অর্থ সরানো হয়েছিল এবং তার কতটুকু উদ্ধার হয়েছে, তদন্তের স্বার্থে সে বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি।
 
তবে হ্যাকারদের এই অর্থ লোপাটে বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো দায় দেখছেন না অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। অর্থ ফেরতে প্রয়োজনে মামলা করবেন বলেও জানান তিনি।
 
এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের এই অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনা তদন্তে যুক্তরাষ্ট্রের সাইবার নিরাপত্তা কোম্পানি ফায়ারআইয়ের ম্যানডিয়েন্ট ফরেনসিক বিভাগের সহযোগিতা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
 
অর্থ জালিয়াতির এই ঘটনায় ক্ষমতাসীনরা জড়িত, এ অভিযোগ করে রিজভী বলেন, ‘ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ন্যাক্কারজনক জালিয়াতির ঘটনা এটি। এই টাকা চুরিতে বর্তমান বাংলাদেশ সরকারের প্রভাবশালী মহল ও সংঘবদ্ধ চক্র জড়িত বলে বাংলাদেশ ব্যাংক স্বীকার করেছে। সরকারের লোক জড়িত হওয়া ছাড়া এত বড় জালিয়াতির ঘটনা কোনোভাবেই সম্ভব নয় বলে দেশবাসী বিশ্বাস করে।’
 
তিনি বলেন, ‘এর আগে শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি, ডেসটিনি কেলেঙ্কারি, হলমার্ক কেলেঙ্কারি, বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারি, জনতা ও রুপালী ব্যাংক কেলেঙ্কারিসহ রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংকগুলোর হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাটের ফলে দেশের আর্থিক খাত আগেই ধ্বংস হয়ে গেছে। ওইসব জালিয়াতিতে সরকারের মন্ত্রী, উপদেষ্টা ও নেতৃবৃন্দসহ রাঘববোয়ালদের নাম উঠে আসলেও তাদের বিচার না হওয়ায় লুটপাটের ঘটনা দিন দিন বেড়েই চলেছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের লুট হওয়া ৮০০ কোটি টাকা তারই জ্বলন্ত প্রমাণ।’
 
অর্থ জালিয়াতির তদন্তে বিনাকারণে বিদেশ ভ্রমণকারী বাংলাদেশ ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তাদের পাসপোর্ট যাচাই করে অনুসন্ধান করার দাবি জানান বিএনপির এই নেতা।
 
‘বাংলাদেশ ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ের যে কর্মকর্তারা গত তিন বছরে সরকারি কাজের বাইরে ঠুনকো অজুহাতে সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক, হংকং, মালেশিয়া, ফিলিপাইন, শ্রীলংকা, দুবাই ভ্রমণ করেছেন, তাদের পাসপোর্ট যাচাই করে অনুসন্ধান করলেই এই আন্তর্জাতিক জালিয়াত চক্রের রাঘববোয়ালদের সংশ্লিষ্টতা বেরিয়ে আসবে।’
 
অর্থ ফেরত পাওয়া যাবে কি না, তা নিয়ে গভীর সংশয় প্রকাশ করে রিজভী বলেন, ‘এর আগে ইবিএল ও ডাচবাংলা ব্যাংক থেকে শত শত কোটি টাকা ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে লোপাট হয়েছে। সরকার লোক দেখানো তদন্ত ও কয়েকজনকে গ্রেফতার করলেও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে ব্যর্থতার কারণেই ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে অর্থ লুটপাটের ভয়াবহ চিত্র প্রকাশ পাচ্ছে।’
 
তিনি বলেন, ‘সমস্ত ব্যাংক আজ ফোকলা হয়ে পড়েছে। মানুষ এখন আর ব্যাংকে টাকা রাখতে সাহস পাচ্ছে না। দেশে আজ ’৭৪ এর অবস্থা বিরাজ করছে। সে সময় যেভাবে ব্যাংক লুুট ও ব্যাংক ডাকাতির ঘটনা ঘটত, তা এখনো অহরহ ঘটছে। বর্তমানে দেশের আর্থিক খাত ভেঙে পড়েছে। এভাবে চলতে থাকলে দেশ ধ্বংস হতে আর সময় লাগবে না।’
 
অর্থ জালিয়াতির বিভিন্ন ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে অবিলম্বে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সকল ব্যাংক লুটপাটকারীদের চিহ্নিত করে বিচারের জোর দাবি জানান বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
 
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির নেতাদের মধ্যে আবদুস সালাম, খায়রুল কবির খোকন, আবদুল লতিফ জনি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

জয় পরাজয় আরো খবর

adv
সর্বশেষ সংবাদ
সাক্ষাতকার
adv
সব জেলার খবর
মুক্তমত
আর্কাইভ


বিজ্ঞাপন দিন

adv

মিডিয়া