adv
২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

১৫৯ বাংলাদেশি যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কার হচ্ছেন

new-york20160305041313ডেস্ক রিপোর্ট : দালালকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে বিভিন্ন দেশ ঘুরে মেক্সিকো হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বেআইনিভাবে প্রবেশের সময় আটক ১৫৯ বাংলাদেশিকে বহিষ্কারের চূড়ান্ত প্রক্রিয়া অবলম্বন করেছে দেশটির হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ডিপার্টমেন্ট। সম্প্রতি একটি বিশ্বস্ত সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। 

জানা গেছে, মেক্সিকো হয়ে যেসব বাংলাদেশি যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের সময় সীমান্তরক্ষীদের হাতে ধরা পড়েছে তার মধ্যে ১৫৯ জনকে খুব দ্রুত দেশে পাঠিয়ে দিতে চায় মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ডিপার্টমেন্ট। কারণ, আটক এসব বাংলাদেশির বক্তব্যে বিশ্বাসযোগ্য হয়নি যে, জীবন বিপন্ন হওয়ায় তারা দেশ ত্যাগে বাধ্য হয়েছেন। 

হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ডিপার্টমেন্টের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা উল্লেখ করেছেন, এ সব ব্যক্তি নিজেদের ‘বিএনপির কর্মী’ হিসেবে দাবি করলেও তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে কিংবা মেরে ফেলার জন্যে ক্ষমতাসীন সরকারের লোকজন পিছু নিয়েছিল-এমন প্রমাণাদি উপস্থাপনে সক্ষম হয়নি। তবে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এটি অনুমিত হয়েছে যে, তারা নিজ দেশে স্বস্তিতে ছিলেন না। 

ইমিগ্রেশন বিভাগ তথা হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ডিপার্টমেন্ট সূত্রে আরো বলা হয়েছে যে, এদের কাছে বৈধ পাসপোর্ট ছিল না। এজন্যে ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাস এবং নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলেসে বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কাছে এসব ব্যক্তির জাতীয়তা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে ট্র্যাভেল ডক্যুমেন্ট চাওয়া হয়েছে। এরপর ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস তাদের জাতীয়তা সম্পর্কে খোঁজ নিতে বাংলাদেশ সরকারকেও অনুরোধ করা হয়েছে। 

উল্লেখ্য, টেক্সাস, ফ্লোরিডা, আলাবামা, লুইজিয়ানা, পেনসিলভেনিয়া, ক্যালিফোর্নিয়া, নিউজার্সির ইমিগ্রেশন ডিটেনশন সেন্টারে রয়েছেন বেশ কয়েক জন বাংলাদেশি। তাদের অনেকেই ইতোমধ্যে জামিনে মুক্তিও লাভ করেছেন। তারা ‘ক্ষমতাসীন সরকারের দমন-পীড়নে অতিষ্ঠ হয়ে নিরাপদ পরিবেশে জীবন-যাপনের অভিপ্রায়ে বাংলাদেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন এবং দেশে ফেরত পাঠালে ‘জীবন বিপন্ন’ বলেও ইমিগ্রেশন কোর্টকে জানিয়েছেন এবং যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েছেন। এ সকল বাংলাদেশি নিজেদের বিএনপি অথবা যুবদলের কর্মী হিসেবে দাবি করেছেন। 

তাদের সমর্থনে মাঠে নেমেছে কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। দালালকে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের পরও এরা বিপুল অর্থ ব্যয়ে বাধ্য হচ্ছেন। ঐসব স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের আড়ালে কেউ কেউ এদের কাছে অর্থ দাবি করছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও রয়েছে আইনজীবীর ফি।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, রাজনৈতিক আশ্রয় মঞ্জুরির সমর্থনে যে ধরনের জোরালো যুক্তি এবং ডক্যুমেন্ট থাকা প্রয়োজন, তা আটক এসব বাংলাদেশি কারোর কাছেই নেই। তারা সেগুলো সংগ্রহের চেষ্টা করছেন। 

অপরদিকে একটি সূত্র জানিয়েছে, গত বছরের জ্বালাও-পোড়াও আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপি এবং জামায়াত-শিবিরের ক্যাডারদের সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত করেছে যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ডিপার্টমেন্ট। এ ধরনের পরিস্থিতি থেকে মক্কেলদের রক্ষায় এটর্নিরা আদালতে বিস্তারিত বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন। 

নিউইয়র্কের প্রখ্যাত ইমিগ্রেশন এটর্নি অশোক কর্মকার সম্প্রতি তার এক মক্কেলের জন্যে আইনি লড়াইয়ে জয়ী হয়েছেন এবং সেই ডক্যুমেন্ট অনেকের জন্য সহায়ক হচ্ছে বলে জানা গেছে। 

তবে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনার আবেদন যথাযথভাবে নথিভুক্ত হবার আগেই যদি বাংলাদেশ সরকার তাদের ট্র্যাভেল ডক্যুমেন্ট ইস্যু করে তাহলে ডিপোর্টেশন ঠেকানো কঠিন হয়ে পড়বে বলে এটর্নিরা মন্তব্য করেছেন। 

জাতীয়তা যাচাইয়ের জন্য ১৫৯ জনের একটি তালিকা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের কাছে পাঠিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আমেরিকা উইং। যুক্তরাষ্ট্র সরকারের পাঠানো তালিকা পর্যালোচনায় দেখা যায়, আটককৃতদের বয়স ২৫ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। সবার নামের পাশাপাশি জন্ম তারিখও উল্লেখ করা হয়েছে। কারো কারো আন্তর্জাতিক ড্রাইভিং লাইসেন্স নম্বর, জাতীয় পরিচয় পত্র ও অন্যান্য ট্রাভেল ডকুমেন্টের নম্বরও উল্লেখ করা হয়েছে। 

এ তালিকায় আছেন : মামুন আলম, সোহেল আহামদ, মিজানুর রহমান, সাব্বির আহম্মদ, মইনুল ইসলাম, মাহমুদুল জিলানী, আহমদ রুমন, কামাল হোসেন,অহিদুর রহমান, মোহাম্মদ সোহেল, আকতার হোসেন, মাহমুদুল হাসান, নাজমুল আহসান, আবদুর রহমান, ফকরুল ইসলাম, অসীম চন্দ্র দাস, নাসির উদ্দিন, ইমন বড়ুয়া, আহমদ শেখ সিব্বির, আমিনুর ইসলাম, হেলাল উদ্দিন, আবুল হোসেন, হারুন মিয়া, মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন, হৃদয় হোসেন, জাহেদ হোসেন, মোহাম্মদ উদ্দিন, সোহরাব হোসেন, আশরাফ হোসেন, জাকারিয়া, রাসেল আহম্মেদ, আবদুস সামাদ, মনির হোসেন, তোফাজ্জল হোসেন, মো. আমানউল্লাহ, শিব্বির আহমদ, রিপন সরদার,  মনির হোসেন, খালেদ মিয়া, হাফিজুর রহমান, মহসীন হোসেন, সাজু আলী, মোহাম্মদ রাসেল, আমাদুর রশীদ বাবু, আবু জাফর, আবদুল আসাদ, মোহাম্মদ আসলাম, মোজাম্মেল হোসেন,আলী নাসের, রায়হান, মতিউর রহমান, আবদুল হালিম, দেলোয়ার হোসেন, আকরাম হোসেন, নাভিদ আজম, ফিরোজ আলম, সোহাগ হোসেন, বিবেক কান্তি দাস, মোহাম্মদ মইনুল হক, আশফাক চয়ন, ইসতাক আহমদ, জুম্মার হোসেন, মো. মহসীন, গাজী কবির, শীপন আহম্মেদ চৌধুরী, বশির বাবু, জামাল মোল্লা, আলী আসগর, শওকত হোসেন, মনিরুল মুন্না, মাহবুবুর রহমান, মোহাম্মদ ইসলাম, মো. ইসলাম, রাসেল আহম্মদ, ইকবাল মুক্তার, শিহাব আহম্মেদ, লাবু খান, নাঈম সরকার, আনোয়ার রানা, নাসিম আহমেদ, মোহাম্মদ মিলন ভূঁইয়া, মোহাম্মদ ইসলাম, আবু ভূঁইয়া, তারেক আহম্মদ, মামুনর রশীদ, অহিদুল ইসলাম, মোহাম্মদ হোসেন, আবদুর রউফ, মারুফ আহমদ, শহীদ উল্লাহ দুলাল, খালেদুর রহমান, আবুল হাসান, আকাব উদ্দিন, রাজীব মিয়া, আনোয়ার হোসেন, সাবুল হোসেন, ক্লিনটন নাথ, গোলাম মেসবাহউদ্দিন, মোহাম্মদ শাহজাহান,  মাহফুজুর রহমান, ডালিম আহমদ, আবু সাঈদ, মোস্তাফিজুর রহমান, মাসুম উদ্দিন, কামাল হোসেন, আশিকুল রাসেল, সালমান হোসেন, মো. মাহবুবুর রহমান, সোহরাব হোসেন, মোহাম্মদ তাজেল, আকরাম হোসেন আবেদ ও শাকিল প্রভাগী।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে আটক এ সব বাংলাদেশির মধ্যে সিলেট, নোয়াখালী ও চট্টগ্রামের অধিবাসীই বেশি।

অপরদিকে, গত এক বছরে  বাংলাদেশ থেকে দেশটিতে পালিয়ে যাওয়া কমপক্ষে ২০ ব্লগার-লেখক-প্রকাশক যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাসের আবেদন করেছেন। তারাও ধর্মীয় জঙ্গিদের হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন বলে এসাইলামের আবেদনে উল্লেখ করেছেন। জাগো নিউজ

জয় পরাজয় আরো খবর

adv
সর্বশেষ সংবাদ
সাক্ষাতকার
adv
সব জেলার খবর
মুক্তমত
আর্কাইভ


বিজ্ঞাপন দিন

adv

মিডিয়া