‘বিদেশে বসে গুপ্তহত্যায় মেতেছেন খালেদা জিয়া’
নিজস্ব প্রতিবেদক : সরকার পতনের আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এখন বিদেশে গিয়ে গুপ্তহত্যায় মেতেছেন বলে অভিযোগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, দেশের শান্তিপূর্ণ সময়ে খালেদা জিয়া হত্যাকাণ্ড পরিচালনা করে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করছেন।
জেল হত্যা দিবস উপলক্ষে সোমবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
১৯৭৫ সালের ২ নভেম্বরের দিবাগত মধ্যরাতে (৩ নভেম্বর) ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে হত্যা করা হয় জাতীয় চার নেতাকে। তারা হলেন সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, মোহাম্মদ মনসুর ও মোহাম্মদ কামারুজ্জামান।
বিএনপির নেত্রীকে উদ্দেশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “মানুষের শান্তি দেখলেই অশান্তি শুরু হয় একজনের মনে, যিনি জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত বিএনপি অফিসে বসে থেকে আন্দোলন করেছেন। তিনি বলেছেন দাবি না মানলে নাকি অফিস থেকে বের হবেন না। আগুন দিয়ে মানুষ হত্যার রীতি শুরু করেছে পাকিস্তানিরা, এরপর এই কাজ করেছেন জিয়ার স্ত্রী। ২৮২ দিন টানা আন্দোলন করেছেন। মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করেছেন।”
শেখ হাসিনা বলেন, এরপর ব্যর্থ হয়ে তিনি (খালেদা) নিজে ঘরে ফিরেছেন। রাজনৈতিকভাবে ব্যর্থ হয়ে তিনি গেছেন বিদেশে। তিনি এখন গুপ্তহত্যায় নেমেছেন। লেখক, প্রকাশকসহ সবার ওপর গুপ্তহত্যা।
গুপ্তহত্যায় জড়িতদের পরিচয় প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “যারা ধরা পড়ছে, তাদের পরিচয় কী? তদন্তে বের হচ্ছে তারা ছাত্রজীবনে হয় শিবির করত, না হয় ছাত্রদল করত। যখনই দেশের মানুষ শান্তি পাচ্ছে, তখনই হত্যাকাণ্ড পরিচালনা করে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করছেন তিনি (খালেদা)।
এর আগে বক্তৃতার শুরুতে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় চার নেতার প্রতি শ্রদ্ধা জানান। প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতার বেশির ভাগ জুড়েই ছিল বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ও বর্তমান চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্রতি সমালোচনা।
বঙ্গবন্ধু হত্যা, জেল হত্যার ঘটনায় বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের জড়িত বলে দাবি করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি কারাগারে চার নেতা হত্যার কথা উল্লেখ করে বলেন, “কারাগার একটি সুরক্ষিত জায়গা। কীভাবে খুনিরা সেখানে ঢুকল? অবশ্যই তাদের যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেয়া হয়েছে।
জিয়াউর রহমানের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রিী বলেন, খুনিদের বিচার করা হয়নি। বরং তাদের বিভিন্ন সময়ে পুরস্কৃত করা হয়েছে। তাদের বাঁচানোর জন্য ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করা হয়।
সভায় আরো বক্তব্য দেন উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু, প্রেসিডিয়াম সদস্য মতিয়া চৌধুরী, মোহাম্মদ নাসিম, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম প্রমুখ।
বেলা দুইটা থেকে সমাবেশ শুরু হলেও এর আগে থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে আওয়ামী লীগ, এর সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে এসে হাজির হতে থাকেন। সমাবেশ ঘিরে নেয়া হয়েছিল বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থা।