adv
২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

‘পরীক্ষা ছাড়া এলাকার স্কুলে ভর্তি হওয়া শিশুদের অধিকার’

pm-thereport24নিজস্ব প্রতিবেদক : পরীক্ষা ছাড়া প্রথম শ্রেণিতে শিশুদের ভর্তি করানোর কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নিতেও সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটা স্কুলে ছাপানো প্রশ্নপত্র দিয়ে পরীক্ষা নিয়ে ভর্তি করতে হবে এটা ঠিক নয়। যে এলাকায় যে বসবাস করে সে এলাকায় ভর্তি হওয়া তাদের অধিকার। সরাসরি তাদের আগে ভর্তি করিয়ে নিতে হবে।’
রবিবার বাংলাদেশ শিশু একাডেমি অডিটোরিয়ামে বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহ-২০১৫ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘শিক্ষা মন্ত্রণালয়, মহিলা ও শিশু, সমাজকল্যাণ এবং প্রাথমিক শিক্ষা মন্ত্রণালয় অবশ্যই এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নিবেন। আর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এটা যেন সমন্বয় করা হয়। তারা যেন লক্ষ্য রাখেন কাজগুলো ঠিক মতো হচ্ছে কিনা।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দুর্ভাগ্য আজকাল আমাদের দেশে, যেমন এই ঢাকা শহরে দেখি এত ফ্লাট বাড়ি হয়েছে তাদের খেলাধুলার জায়গা রাখা হয় না। এই ফ্লাট বাড়িতে থেকে বাচ্চারা ওই ফার্মের মুরগির বাচ্চার মতো মানুষ হচ্ছে।’
লেখাপড়ার জন্য আনন্দঘন পরিবেশের ওপর গুরুত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শিশুদের লেখাপড়া শেখাতে পাঠানো মানে এক গাদা বইয়ের বোঝা কাঁধে চাপিয়ে দিয়ে তাদের সারাক্ষণ পড় পড় এর ওপরে রাখা। এটা কিন্তু কখনো গ্রহণযোগ্য না।’
প্রত্যেকটা স্কুলে খেলাধুলা ও বিনোদনের ব্যবস্থা রাখতে সংশ্লিষ্টদের বিশেষ দৃষ্টি দেওয়ার নির্দেশনা দেন শেখ হাসিনা।
সকল শিশুর শিক্ষাসহ মৌলিক অধিকারগুলোর নিশ্চিত করার ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইতিমধ্যে অনেক হিসেবে এসেছে ৩৪ লাখ শিশু নাকি ঢাকার রাস্তায় ঘুরে। এখানে আমাদের মহিলা ও শিশু মন্ত্রণালয় এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় আছে। এই দুই মন্ত্রণালয়কে আমি নির্দেশ দিচ্ছি একটি শিশুও রাস্তায় ঘুরবে না। একটা শিশুও এভাবে মানবেতর জীবনযাপন করবে না।’
শিশু ও মায়েদের খাদ্য, পুষ্টি, চিকিৎসা নিশ্চিত করার কথাও বলেন তিনি।
সারা দেশের সব শিশুর নিরাপত্তার নিশ্চিত করার কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
ছোট বেলার কথা স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রাথমিক বিদ্যালয়টা ছিলো খালের ওপাড়ে। পুল পার হয়ে স্কুলে যেতে হতো। আমার আব্বা জেলখানায় ছিলেন বছরের পর বছর। আমার দাদি সব সময় আমাদের ব্যাপারে চিন্তা করতেন। সোজা বলে দিলেন পুল পার হয়ে স্কুলে যাওয়া লাগবে না। ঘরে বসে পড়বি। ঘরে মাস্টার, পন্ডিত, আরবি পড়ার শিক্ষক ছিলো। কাজেই আমার স্কুলে যাওয়া বন্ধ।’
‘দাদিদের মনে তো এই দুশ্চিন্তাটা থাকে। আমি তো এখন দাদি হয়েছি, নানি হয়েছি, কাজেই আমার এই দুশ্চিন্তা শিশুদের নিয়ে আছে।’
গৃহকর্মী শিশুদের ওপর নির্যাতনের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘খুব কষ্ট হয় আমার দেখলে। অনেক সময় অনেক শিশুকে বাড়িতে নিয়ে আসা হয় কাজের জন্য। সেই শিশুদেরও লেখাপড়ার অধিকার রয়েছে। তাদের শিক্ষার সুযোগ দিতে হবে। তাদের মারা, অত্যাচার করা, মানুষ এভাবে এত নির্দয় হয় কিভাবে? আমি এটা ভেবে পাই না।’
‘কোনভাবে শিশুদের ওপর নির্যাতন মেনে নেওয়া যাবে না। এটা বন্ধ করতে হবে। শিশুদের দিয়ে কোনো ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করান যাবে না। শিশুদের কাজ পড়াশুনা করা।’
প্রতিবন্ধী শিশুদের প্রতি সবাইকে সহানুভূতিশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জš§ থেকে হয়তো অনেকে শারিরিক সমস্যা থাকে। এটা তাদের অপরাধ না। এই ধরনের শিশুদের তোমরা আদর করবে, যত্ম করবে, বন্ধু সুলভ ওসহানুভূতিশীল আচারণ করবে। তাদের নিয়ে হাসি ঠাট্টা কখনো করবে না। বাবা মায়েদের বলব তারা যেন শিশুদের সেভাবে শিক্ষা দেন।’
প্রতিবন্ধী শিশুদের চিকিৎসার পাশাপাশি কাউন্সিলের ওপর গুরুত্ব দিতে সংশ্লিষ্টদের পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকির সভাপতিত্বে এতে আরও বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ শিশু একাডেমির চেয়ারম্যান কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাছিমা বেগম প্রমুখ।

 

জয় পরাজয় আরো খবর

adv
সর্বশেষ সংবাদ
সাক্ষাতকার
adv
সব জেলার খবর
মুক্তমত
আর্কাইভ


বিজ্ঞাপন দিন

adv

মিডিয়া