adv
২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

এমপি লিটন হাফিজার বাড়িতেও গুলি চালান!

ab siddique 06-10-2015_85984ডেস্ক রিপোর্ট : গাইবান্ধায় শিশু সৌরভ যেদিন গুলিবিদ্ধ হয়, একই দিন আরও একজনের বাড়িতে গিয়ে এলোপাথারি গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছে গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনের বিরুদ্ধে। ঘটনার পর ভুক্তভোগী ভয়ে এ নিয়ে কোন কথা বলেনি বলে জানিয়েছেন প্রত্যদর্শীরা। তবে সংসদ সদস্য লিটন আত্মগোপনে যাওয়ার পর ভুক্তভোগী হাফিজার রহমান সুন্দরগঞ্জ থানায় এ নিয়ে অভিযোগ করেছেন।


ঘটনার একাধিক প্রত্যদর্শী জানান, সৌরভকে গুলি করে উত্তর সাহাবাজ গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে হাফিজারের বাড়িতে যান সাংসদ লিটন। সেখানে তিনি এলোপাতাড়ি গুলি শুরু করার পর হাফিজারসহ পরিবারের লোকজন বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান। সাংসদকে থামাতে হাফিজারের বৃদ্ধা মা খুকী বেওয়া পা জড়িয়ে ধরেন। তাকেও লাথি-ঘুষি দিয়ে গুলি করতে উদ্যত হন সাংসদ লিটন। এরপর তার বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর, লুটপাট চালান বলেও অভিযোগ হাফিজার পরিবারের। 

সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইসরাইল হোসেন বলেন,  হাফিজার রহমানের অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এলাকাবাসী জানান, সাংসদ লিটন এর আগেও এলাকায় নানা অপকর্ম করেছেন। মতার অপব্যবহার, স্বেচ্ছাচারিতা, উন্নয়ন প্রকল্পের নামে  লুটপাট, চাকরিতে নিয়োগের নামে অর্থ হাতানো,  মুক্তিযোদ্ধাসহ দলীয় নেতাকর্মীদের নানাভাবে লাঞ্ছিত করাসহ অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। কিন্তু সরকার দলের সংসদ সদস্য হওয়ায় প্রভাবের কারণে এতদিন মুখ খুলতে সাহস পায়নি কেউ। এখন সোচ্চার হচ্ছে তারাও। এমনকি লিটনের নিজ দল আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরাও এখন কথা বলছেন বিষয়টি নিয়ে।


বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা মজনু হিরো বলেন, ‘লিটন ও তার বাহিনীর সদস্যদের বিপুল অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে। সেই অস্ত্রগুলো বিভিন্ন সময় নানা অপকর্মে ব্যবহার করা হয়েছে’। সাংসদের অস্ত্রের লাইসেন্স বাতিল হলেও এই অস্ত্রগুলো নিয়ে তারা এখন আতঙ্কে রয়েছেন বলে জানান মজনু হিরো।

আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা জানান, কেউ লিটনের বিরোধিতা করতে গেলেই নিজের স্বার্থে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও মুক্তিযোদ্ধাদেরও জামায়াত-শিবির বানিয়েছে দুর্নাম ছড়িয়েছেন। আবার জামায়াত-শিবিরের লোকদের কাছ থেকে সুবিধা নিয়ে তাদেরকে আওয়ামী লীগ এবং মুক্তিযোদ্ধা সাজিয়েছেন।

সূত্র জানায়, ১৯৯৬ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেয়া কয়েকটি লোকাল ও মেইল ট্রেন লিজ নেন এই সাংসদ। ইসলাম শিপ বিল্ডার্স অ্যান্ড হেভি ইঞ্জিনিয়ারিং নামের একটি প্রতিষ্ঠানেরও তিনি স্বত্বাধিকারী। রেলের বিভিন্ন পদে চাকরি দেয়ার নাম করে ঘুষ নিয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। অনেকে চাকরির জন্য তাকে টাকা দিয়ে আর ফেরত পাননি।


সুন্দরগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার এমদাদুল হক বাবলু বলেন, ‘সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার জাকারিয়া হোসেন খন্দকারকে সাংসদ লিটন রাজাকার ও জামায়াত বলে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি নিজ স্বার্থে দলীয় নেতাকর্মীদেরকেও জামায়াত-শিবির বা রাজাকার বানাতে কুণ্ঠাবোধ করেননি। আমরা তার এই কর্মকাণ্ডে বিব্রত’।


গত শুক্রবার সকালে মাতাল অবস্থায় স্কুলছাত্র সৌরভকে গুলির ঘটনার পর থেকে সাংসদ লিটন ও তাঁর পিএস আত্মগোপনে রয়েছেন। তাদের মোবাইলফোনও বন্ধ রয়েছে। মোবাইলে বারবার কথা বলার চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।

গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক আব্দুস সামাদ বলেন, সাংসদের আগ্নেয়াস্ত্র দুইটির লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আরও কোনো অভিযোগ থাকলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

জয় পরাজয় আরো খবর

adv
সর্বশেষ সংবাদ
সাক্ষাতকার
adv
সব জেলার খবর
মুক্তমত
আর্কাইভ


বিজ্ঞাপন দিন

adv

মিডিয়া