মিনা দুর্ঘটনায় বাংলাদেশি মৃতের সংখ্যা বাড়ছে
ডেস্ক রিপোর্ট : সৌদি আরবের মক্কা নগরীর মিনায় শয়তানকে পাথর মারার সময় পদদলিত হয়ে সাত শতাধিক নিহতের মধ্যে বাংলাদেশিদের সংখ্যা বাড়ছে। বৃহস্পতিবার রাত ১১ টা পর্যন্ত অন্তত চার জনের কথা শোনা গেছে। তবে এদের মধ্যে একজন মহিলার কথা নিশ্চিত করা গেছে। ওই মহিলার নাম ফিরোজা বেগম। তার বাড়ি জামালপুরে। ফিরোজা বেগমের পরিবারের সদস্যরাও বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অপর একজনের নাম সুনামগঞ্জের জুলিয়া হুদা বলে জানা গেছে। তবে তিনিসহ আরও যে দুই জনের মৃত্যুর কথা শোনা যাচ্ছে। তবে তাদের ব্যাপারে নিশ্চিত করে কিছু জানা যায়নি।
জুলিয়া হুদার লাশ মিনার একটি হাসপাতালে পাওয়া যায় বলে তার এক আত্মীয় ফোনে সৌদি আরব থেকে জানিয়েছে। নিহতদের মধ্যে ফেনীর সোনাগাজির একজন মহিলাসহ দুই জন নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। নিহতদের পরিবারের সদস্যারা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বলে একটি টিভির খবরে বলা হয়েছে।এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি।
তবে সময় যত বাড়ছে মিনায় বাংলাদেশি হাজিদের মৃত্যুর সারিও বাড়ছে।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে যাওয়া অনেক হাজিকেই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না বলে সূত্র জানিয়েছে। নিখোঁজ এসব বাংলাদেশি হাজি আহত হয়ে হাসপাতালে রয়েছেন নাকি পদদলিত হয়ে নিহত হয়েছেন তা জানা যায়নি।ইরান তাদের ৪১ জন হাজির মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহত ফিরোজা বেগম তার ছেলের সঙ্গে হজে গিয়েছিলেন। ছেলে তার মায়ের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের কন্স্যুলেটর জেনারেল একে এম শহিদুল করিমও একজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এছাড়া কয়েকজন বাংলাদেশি আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। তবে তাদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, হাসপাতালে আহত হাজির সংখ্যা বাড়ছে, বাড়ছে নিহতেরও সংখ্যা।তবে এ ব্যাপারে প্রকৃত তথ্য দেবে সৌদি সরকার। সৌদি আরবের মিনায় পদদলিত হয়ে কয়েকজন বাংলাদেশি আহত হয়েছেন বলে জানিয়ে সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসিহ বলেছেন, তবে তাঁদের সংখ্যা কত, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
সৌদি আরবে বাংলাদেশ দূতাবাস জানিয়েছে, এ ব্যাপারে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। মক্কার হজ মিশন কর্মকর্তারা হাসপাতালগুলোতে খোঁজাখুজি করছেন বলে জানা গেছে। তারা বিভিন্ন সূত্রে জানার চেষ্টা করছেন মিনায় হতাহতের মধ্যে কতজন বাংলাদেশি রয়েছেন।
সৌদি আরবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ টেলিফোনে সংবাদমাধ্যমকে বলেন, খবর পেয়েই আমরা লোক পাঠিয়েছি। তারা হাসপাতালে গেছেন, জানার চেষ্টা করছেন বাংলাদেশিদের অবস্থা।
বৃহস্পতিবার বিকালে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম তাঁর ফেসবুকের পাতায় লিখেছেন, ‘মিনা হাসপাতালে অবস্থান করা আমাদের এক কর্মকর্তার মতে, মৃতদেহগুলো হাসপাতালে আনা হচ্ছে এবং কর্তৃপ কাউকে ভেতরে ঢুকতে দিচ্ছে না। হাসপাতাল কর্তৃপ কোনো তথ্য দেওয়া মাত্রই আমরা স্বজনদের তা জানাব।
মিনাতে আমাদের হটলাইন নাম্বার হচ্ছে: +৯৬৬৫৩৭৩৭৫৮৫৯ এবং +৯৬৬৫০৯৩৬০০৮২।’
এদিকে, এই হতাহতের খবর পাওয়ার পর থেকে চরম উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছেন হজ করতে যাওয়া লাধিক হজযাত্রীর পরিবার ও স্বজনরা। অনেকে সরাসরি তাদের স্বজনদের সঙ্গে ফোনে আলাপ করে নিশ্চিত হচ্ছেন তারা সুস্থ আছেন। আবার অনেকেই স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে উৎকণ্ঠায় আছেন।
এর আগে ক্রেন দুর্ঘটনায় এক বাংলাদেশির মৃত্যু হয় এবং আহত হন বেশ কয়েকজন।