adv
২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভূমিকম্প ছাড়াই প্রতিদিন কাঁপে সংসদ ভবন

1432095745azzhf6qkডেস্ক রিপোর্ট : জাতীয় সংসদ ভবনকে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত রাখতে ব্যবহৃত উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন সেন্ট্রাল এসি ও আনুষঙ্গিক যন্ত্রাংশ দীর্ঘদিন ব্যবহারের ফলে তা এখন তীব্র শব্দ ও ঝাঁকুনির সৃষ্টি করে। এছাড়া ৯ম তলার সংসদ ব্লকে স্থাপিত আছে বৈদ্যুতিক উপকেন্দ্র। যে কারণে সংসদ ভবনের ষষ্ঠ থেকে নবম তলায় সৃষ্টি হয় কম্পনের। ভূমিকম্প না হলেও প্রতিদিনই প্রায় ১২ ঘণ্টা ধরে কাঁপে সংসদ ভবন। নতুন কেউ এলে সেটাকে ভূমিকম্প মনে করে ভুলও করেন।

স্থাপত্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ কম্পনের ফলে দূর্ঘটনা না ঘটলেও ভবনের স্থায়ীত্ব কমবে। তবে সংসদে নিয়োজিত গণপূর্ত বিভাগের প্রকৌশলীরা বলছেন, এই কম্পনে কোনো সমস্যা নেই।

এদিকে মেয়াদোত্তীর্ণ এসির মেশিন ও যন্ত্রাংশ পরিবর্তনে বাজেট পেশ করলেও তা পাস না হওয়ায় গণপূর্ত বিভাগ কিছু করতে পারছে না।

স্থাপত্যশৈলীর মাধ্যমে বাংলাদেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে ফুটিয়ে লুই আই কান গড়েছিলেন জাতীয় সংসদ ভবন। ১৯৮২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের দ্বিতীয় সংসদের অষ্টম এবং শেষ অধিবেশনে প্রথম সংসদ ভবন ব্যবহৃত হয়। তখন থেকেই আইন প্রণয়ন এবং রাষ্ট্র পরিচালনার মূল কেন্দ্র হিসেবে এই ভবন ব্যবহৃত হয়ে আসছে। তবে দীর্ঘ ৩৩ বছরের এই পথ পরিক্রমায় পুরনো হয়ে উঠেছে এই ভবনের ৯ম তলায় স্থাপন করা সেন্ট্রাল এসি এবং এগুলোর মেকানিক্যাল যন্ত্রাংশ। ফলে প্রতিদিন সেসব মেশিন চালু করলে মৃদু কাঁপতে থাকে সংসদ ভবনের ষষ্ঠ থেকে ৯ম তলা।

এ বিষয়ে ইমারত বিশেষজ্ঞ স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন বলেন, ভবনটি যখন করা হয় তখন লোড ও ভাইব্রেশন ক্যালকুলেশন করে হয়েছে। কিন্তু মেশিনগুলোর কম্পনের ফলে দুর্ঘটনা না ঘটলেও সংসদ ভবনের স্থায়িত্ব কমিয়ে দিচ্ছে। তাই সরকারের ও পিডব্লিউওডির উচিত তা দ্রুত বদলিয়ে ফেলা।

৯ম তলায় মেশিন রাখা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মেশিন রাখা সম্ভব। কারণ নিচে রাখলে তা থেকে বেনিফিট উপরে পাঠাতে অনেক এনার্জি কনজিউম হয়। তাই ৯ম তলায় মেশিন বসানো হলেও এতে ভাইব্রেশন কমানোর মেশিন ব্যবহার করতে হবে অথবা আধুনিক কম্পনরোধক মেশিন বসাতে হবে।

সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল ৯টা থেকে সংসদ সচিবালয়ের কার্যক্রম শুরু হয়। আর এই সময় চালু করা হয় সংসদের ভবনের ৯ম তলায় স্থাপন করা সেন্ট্রাল এসি। এসব মেশিন দীর্ঘদিন ব্যবহারের ফলে তা এখন তীব্র শব্দ ও ঝাঁকুনির সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া ৯ম তলার সংসদ ব্লকে স্থাপিত আছে বৈদ্যুতিক উপকেন্দ্র।

সংসদ ভবনের মেকানিক্যাল সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো দেখভাল করে গণপূর্ত বিভাগের (পিডব্লিউডি) ই/এম (ইঞ্জিনিয়ারিং/মেকানিক্যাল) সার্কেল-৩ উপ-বিভাগ। তারা জানান, সংসদ ভবনের এসি ও এ সংক্রান্ত যন্ত্রাংশ ২০ বছর পর পাল্টানোর কথা থাকলেও ৩৪ বছরেও আধুনিক মেশিন বসানো হয়নি।

গণপূর্ত বিভাগ জানায়, ২০ বছর পর মেশিনগুলো বদলিয়ে ফেলার নিয়ম থাকলেও কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে তা সম্ভব হয়নি। পরিকল্পনা কমিশনে দুই বছর আগে পুরাতন এসির মেশিন ও জেনারেটর পাল্টে আধুনিক জেনারেটর ও এসির মেশিন ক্রয়সহ আনুষঙ্গিক কাজের জন্য (ইলেকট্র মেকানিক্যাল ইক্যুইপমেন্ট) প্রায় ১০৪ কোটি টাকার বাজেট পেশ করেছে গণপূর্ত বিভাগ। কিন্তু এতদিন হয়ে গেলেও একনেকে তোলা হয়নি এই বাজেট। ফলে গণপূর্ত বিভাগ কিছু করতে পারছে না।

চার বছর আগেও সংসদ ভবনে এসির মেশিনগুলোর জন্য কম্পন অনুভূত হতো না। অথচ এখন হচ্ছে। দ্রুত যদি এসব পুরনো মেশিন সরিয়ে ফেলা না হয়, তবে এই কম্পন আরো বৃদ্ধি পাবে। এতে দীর্ঘমেয়াদে ভবনের কাঠামোতে ক্ষতি হতেও পারে।

জয় পরাজয় আরো খবর

adv
সর্বশেষ সংবাদ
সাক্ষাতকার
adv
সব জেলার খবর
মুক্তমত
আর্কাইভ


বিজ্ঞাপন দিন

adv

মিডিয়া