adv
১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রোববার শুরু হচ্ছে সরস্বতী পূজা

news_imgনিজস্ব প্রতিবেদকঃ  ফুটেছে শেফালী দুলছে গোলাপ সারা দিচ্ছে বেলি আর পদ্ম। এসেছে মাঘ পড়ছে শিশির আর এরই মধ্যে বেজে উঠেছে বিদ্যার দেবী মা সরস্বতীর আগমনি বার্তা। এসেছে মা বিদ্যার থলে নিয়ে, আবার চলে যাবে বেদনায় হিন্দুকুলকে ছাপিয়ে।
২৪ জানুয়ারি স্বর্গ থেকে সন্তানদের কল্যাণ করতে মর্তে নেমে এলেন মা সরস্বতী। তার আগমনের সাথে সাথে শুরু হয়ে গেছে হিন্দুদের আরাধনা। সারা পড়ে গেছে সনাতনের পাড়ায় পাড়ায়। একটি বছর পর মা আসছে তার সন্তানদের বিদ্যা দিতে।
তবে এবার ২ দিন ব্যাপী হবে মায়ের পূজা। এরই মধ্যে বাংলাদেশের সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা জ্ঞানলাভের আশায় শনিবার প্রথম দিনেই জাঁকজমকের সঙ্গে পূজা দেয়া হচ্ছে বিদ্যাদেবী সরস্বতীর। তবে বেশিরভাগই রোববার বিদ্যাদেবীর আরাধনা করবেন।
এবার পূজার লগ্ন পড়েছে শনিবার বেলা ১১টা ৯ মিনিট থেকে রোববার সকাল ৮টা ৫২ মিনিট পর্যন্ত। অধিকাংশ হিন্দু ধর্মাবলম্বীর‍ রবিবার পূজা দেবেন বিদ্যা দেবীকে।
প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের শ্রী-পঞ্চমী তিথিতে দেবী সরস্বতীর পূজা করা হচ্ছে।
পূজা শেষে ভক্ত ও দর্শনার্থীদের মধ্যে প্রসাদ বিতরণ করা হবে। দিনভর বিভিন্ন পূজামণ্ডপে প্রসাদ হিসেবে বিতরণ করা হবে ফলমূল, লুচি-তরকারি, নিরামিশ-খিচুরি, মিষ্টি-দই। সন্ধ্যায় পূজামণ্ডপে রয়েছে আরতি প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
এবারই প্রথম বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে সরস্বতী বিদ্যাদেবীর পূজা দেয়া হচ্ছে। পূজা করার সিদ্ধান্ত দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিদেশের পত্র-পত্রিকা ও মিডিয়ায় ফলাও করে প্রচারিত হয়েছে।
দেবী সরস্বতী হলেন জ্ঞান-বিদ্যা-সংস্কৃতি ও শুদ্ধতার দেবী। তার সৌম্যাবয়ব, শুভ্র বসন, হংস-সম্বলিত, পুস্তক ও বীণাধারিণী দেবী বাঙালির হৃদয়ে এমনভাবেই বিরাজিত। নেই কোন অন্ধকার-অজ্ঞানতা-পঙ্কিলতা।

সরস্বতী বিদ্যাদেবী হওয়ায় ছাত্র-ছাত্রীরাই প্রাণের উজার করা ভক্তিভরে পূজা দিয়ে থাকে। যেন শিক্ষা-দীক্ষা-জ্ঞানলাভের ক্ষেত্রে কোনো বাধা না থাকে, সহজতর হয়।

অনেকেই বাড়িতে পূজা করেন বিদ্যাদেবীকে। তবে ঘটা করে পূজা দেওয়া হয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। ঢাকার রামকৃষ্ণ মিশন-মঠ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলসহ দেশের অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নানা আচার-অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পূজা দেওয়া হচ্ছে।
ঢাকার রামকৃষ্ণ মিশন-মঠের মৃদুল মহারাজ জানান, তারা শনিবারই দেবী সরস্বতীর পূজা দিচ্ছেন। দেবী আরাধনা, অঞ্জলি প্রদান, প্রসাদ বিতরণ ছাড়াও থাকছে নানা সাংস্কৃতিক আয়োজন।
শিক্ষাকে উঁচু স্তরে আসীন করা হয়েছে সনাতন ধর্মে। ঋষিরা ব্রহ্মের অনন্ত শক্তির অংশকে একেকজন দেব-দেবীরূপে কল্পনা করেছেন। ব্রহ্মের যে শক্তি আমাদের বিদ্যা শিক্ষাদান করেন তাকে সরস্বতী দেবীজ্ঞানে পূজা-অর্চনা করা হয়।
যে কারণে শাস্ত্রে বলা হয়েছে, চতুর্ভুজা ব্রহ্মার মুখ থেকে আবির্ভূতা শুভ্রবর্ণা বীণাধারিণী চন্দ্রের শোভাযুক্তা দেবীই হলেন সরস্বতী। সরস্বতীর ধ্যান, প্রণামমন্ত্র ও স্তবমালা থেকে সামগ্রিক রূপটি হল-‘তিনি শুভ্রবর্ণা শ্বেত পদ্মাসনা, শ্রীহস্তে লেখনী, পুস্তক ও বীণা’।
সরস্বতী দেবীর পূজার কথা শাস্ত্রে বিভিন্নরূপে বর্ণিত আছে। বেদে নদীরূপে, যজ্ঞ কর্মাদিতে প্রজ্ঞাদাত্রীরূপে, ব্রহ্ম কৈবর্ত পুরাণে শ্রীকৃষ্ণ কর্ণৎভবা বাগাধিষ্ঠাত্রীরূপে, শ্রীহরির ভাষারূপে, মৎস্যপুরাণে নৃত্য-গীতাদির সিদ্ধিদাত্রীরূপে সরস্বতীর কথা বর্ণিত আছে।
সরস্বতী মায়ের হাতের বীণা সঙ্গীতবিদ্যার প্রতীক। মনের ভাব প্রকাশ হয় ভাষায় আর প্রাণের ভাব প্রকাশ পায় সুরে। সুর মানুষকে বিমোহিত করে। প্রাণে আনন্দের সঞ্চার ঘটায়। সুরের লহরি সবাই শুনতে চায়। কিন্তু বেসুর কেউ শুনতে চায় না।
দেবীর হাতে বীণা প্রাণের বৈরাগ্য সৃষ্টিকারী ছন্দময় সুর। দেবীর পূজা সংহতি ও সম্প্রীতির রুপলাভ করেছে। প্রতিটি পূজা প্রাঙ্গণ হয়ে ওঠে সার্বজনীন আনন্দময় মিলনমেলার ক্ষেত্র বিশেষ।
 

 

জয় পরাজয় আরো খবর

adv
সর্বশেষ সংবাদ
সাক্ষাতকার
adv
সব জেলার খবর
মুক্তমত
আর্কাইভ


বিজ্ঞাপন দিন

adv

মিডিয়া