৩১ ডিসেম্বর জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞ দল প্রতিবেদন দিবে
নিজস্ব প্রতিবেদক : সুন্দরবনের শ্যালা নদীতে ফার্নেস অয়েল নি:সরণে সঙ্কটাপন্ন ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ সুন্দরবনের জীব-বৈচিত্র্যের অবস্থা সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ শুরু করেছে জাতিসংঘের একটি বিশেষজ্ঞ দল।
এই বিশেষজ্ঞ দলের প্রধান অ্যামোলিয়া ওয়ালস্ট্রম বলেছেন, সুন্দরবনে তেল বিপর্যয় নিয়ে আশা করছি ৩১ ডিসেম্বর সুন্দরবন বিষয়ে সরকারকে একটি প্রাথমিক সুপারিশ প্রদান করা হবে। আগামী ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত কাজ করব আমরা।
বুধবার সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের আন্ধারমানিক এলাকায় এম.এল ফ্লোটিং হোম নামের একটি লঞ্চে বসে জাতিসংঘের এই ‘জয়েন ইউএন গভার্নমেন্ট অয়েল স্পিল রেসপন্স মিশন’ এর প্রধান অ্যামিলিয়া ওয়ালস্ট্রম সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
ওয়ালস্ট্রম বলেন, আমরা চেষ্টা করছি তেল নি:সরণের পর সুন্দরবনের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের। আমাদের ২৫ সদস্যের এই বিশেষজ্ঞ দলে ১১ জন আন্তর্জাতিক এবং ১৪ জন জাতীয় পর্যবেক্ষক রয়েছেন। এরা সবাই তেল দুষণ রোধ, বন, বন্য প্রাণি সম্পর্কে আন্তজাতিক পর্যায়ের অভিজ্ঞ এবং এ দেশের বিভিন্ন বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক।
তিনি জানান, এ দলের সদ্যরা মোট ছয় গ্র“পে ভাগে ভাগ হয়ে কাজ করছে। একটি গ্র“প দেখছে, যে তেল ছড়িয়ে পড়েছে তার বিস্তৃতি কতখানি। দ্বিতীয় গ্রুপ দেখছে তেলের সম্ভাব্য ক্ষতিকর প্রভাব, তৃতীয় গ্রুপ পানিতে প্রাণিজ ও উদ্ভিদের ওপর তেলের প্রভাব, চতুর্থ গ্রুপ বন্য প্রানীর ওপর প্রভাব, পঞ্চম গ্রুপ বন সংলগ্ন মানুষের জীবন ও জীবিকার ওপর এবং ষষ্ঠ গ্রুপ ম্যানগ্রোভ ইকোসিস্টেমের ওপর তেলের প্রভাব দেখছে। পাশাপাশি বিভিন্ন নমুনাও সংগ্রহ করা হচ্ছে। পর্যবেক্ষণ এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে আছে।
ওয়ালস্ট্রম আরো বলেন, আমরা এখানে আগামী ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত কাজ করব। আশা করছি ৩১ ডিসেম্বর সরকারকে এ বিষয়ে একটি প্রাথমিক সুপারিশ প্রদান করবে আমাদের বিশেষজ্ঞ দল। পরবর্তিতে এর একটি ফলোআপ করা হবে। সে সময়ে দীর্ঘ মেয়াদি ক্ষয়ক্ষতি ও করণীয় ব্যাপারে তুলে ধরা হবে।
সুন্দরবনে জ্বালানী তেলবাহী ট্যাঙ্কার ডুবির ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতি ও জীব-বৈচিত্রের উপর এর প্রভাব পর্যবেক্ষণে জাতিসংঘের এই বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধি দল সোমবার বিকেলে বাগেরহাটের মংলায় আসে। মঙ্গলবার সকাল থেকে দলটি পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন ও নমুনা সংগ্রহ করছেন।
নৌ পরিবহন সচিবের পরিদর্শন –
নৌ পরিবহন মন্ত্রনালয়ের সচিব শফিক আলম মেহেদী বুধবার বিকালে বাগেরহাটের মংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেলের খনন কাজ পরিদর্শন এবং খনন কাজের অগ্রগতি পর্যালোচনা করেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘সুন্দরবনের শ্যালা নদীতে ফার্নেস অয়েল ট্যাঙ্কার দূর্ঘটনার পর ওই চ্যানেল সাময়িক ভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আমাদের নৌ চলাচলের সঙ্গে অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের যোগসুত্র রয়েছে। তিনি কম সময়ের মধ্যে মংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেলের খনন কাজ শেষ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন।