adv
২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঈশ্বর (আল্লাহ) নন, সৃষ্টির উতস বিজ্ঞান : পোপ

ডেস্ক রিপোর্ট : ঈশ্বর কোনো জাদুকর নন। তার জাদুদণ্ডের স্পর্শে মহাবিশ্ব বা প্রাণ সৃষ্টি হয়নি। বরং সৃষ্টি রহস্যের সমাধান করেছে বিগ ব্যাং থিওরি এবং বিবর্তনতত্ত্ব। বিজ্ঞানী নয়, সম্প্রতি এই মন্তব্য করে চমকে দিয়েছেন পোপ ফ্রান্সিস।
পূর্বসূরীর উল্টো পথে হাঁটলেন ভ্যাটিকানের অধীশ্বর পোপ ফ্রান্সিস। পন্টিফিক্যাল অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সেস-এর আলোচনাসভায় তিনি ঘোষণা করেছেন, বিশ্ব সৃষ্টির পিছনে মূল কারণ অবশ্যই বিজ্ঞানভিত্তিক ব্যাখ্যা। এক কথায়, বাইবেল প্রচারিত সৃষ্টি রহস্য ও সৃষ্টিকর্তা হিসেবে ঈশ্বরের অস্তিত্বের তত্ত্বকে গুরুত্ব দেননি পোপ। ভ্যাটিকান বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ঘোষণার মাধ্যমে প্রয়াত পোপ বেনেডিক্ট প্রচারিত আধ্যাত্মিক মতবাদের উল্টো রাস্তাতেই হাঁটলেন পোপ ফ্রান্সিস।

বস্তুত, বাইবেল উল্লিখিত ঈশ্বর সৃষ্ট বিশ্বের তত্ত্ব নস্যাত করে পোপ ফ্রান্সিস জানিয়েছেন, 'জেনেসিস-এ সৃষ্টির আদিকথা পড়তে গিয়ে আমাদের ধারণা হয় যে ঈশ্বর একজন জাদুকর, যার যাদুদণ্ডের ছোঁয়ায় যা ইচ্ছে তাই করতে পারেন। কিন্তু এটা ঠিক নয়।' এরপর তার সংযোজন, 'ঈশ্বর মানুষ সৃষ্টি করে উন্নতি সাধনের ভার তাদের ওপরই ছেড়ে দিয়েছিলেন। তিনি তাদের যে নিয়মে বেঁধে দিয়েছিলেন, তার জোরেই তারা পরিপূর্ণতা লাভ করেছে।' পোপ জানান, 'বিগ ব্যাং ঈশ্বরের হস্তক্ষেপ অস্বীকার করে না, বরং তার উপযোগিতা সম্পর্কে সম্মত হয়। এরপর তিনি জানান, 'প্রাকৃতিক বিবর্তনের সঙ্গে সৃষ্টির কোনো সংঘাত নেই, কারণ বিবর্তনের জন্য সৃষ্টি জরুরি।
প্রসঙ্গত, বিজ্ঞানের সঙ্গে ক্যাথলিক চার্চের সংঘর্ষ বহু প্রাচীন। চার্চের চাপের কাছে মাথা ঝুঁকিয়ে শেষ পর্যন্ত পৃথিবীর সূর্য প্রদক্ষিণের তত্ত্ব প্রত্যাহার করে নিতে হয়েছিল বিশ্ববরেণ্য বিজ্ঞানী গ্যালিলিও গ্যালিলিকে। কিন্তু সেই ঐতিহাসিক দ্বৈরথের পথে না গিয়ে বরং পোপ দ্বাদশ পায়াসের দেখানো রাস্তাই অনুসরণ করেছেন পোপ ফ্রান্সিস। পোপ দ্বাদশ পায়াস বিবর্তনবাদ ও বিগ ব্যাং তত্ত্বকে প্রত্যক্ষ ভাবে সমর্থন করেছিলেন। তার এক কাঠি উপরে গিয়ে ১৯৯৬ সালে পোপ দ্বিতীয় জন পল স্বীকার করেন, বিবর্তনবাদ কোনো ধারণা নয়, পরীক্ষিত সত্য।

কিন্তু তা সত্বেও পোপ ফ্রান্সিসের পূর্বসূরি পোপ ষোড়শ বেনেডিক্ট এবং তার ঘনিষ্ঠ পরামর্শদাতারা বিবর্তনের পিছনে অতিবুদ্ধিমান স্রষ্টার অস্তিত্বের প্রচার চালিয়ে গিয়েছেন।
ভ্যাটিকানের সাম্প্রতিক মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ইতালীয় বিজ্ঞানী জিওভানি বিগমানি জানিয়েছেন, 'পোপের মন্তব্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা মহাবিশ্ব সৃষ্টিকারী বিগ ব্যাং-এর সাক্ষাৎ উত্তরসূরী। সৃষ্টির হাত ধরেই আসে বিবর্তন।
আবার ইতালির মিলান বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান দর্শনের অধ্যাপক জিউলিও জিওরেল্লির মতে, 'আসলে বিজ্ঞান ও চার্চের চিরাচরিত সংঘাতপূর্ণ সম্পর্ক সহজ করার চেষ্টা করেছেন পোপ ফ্রান্সিস।
বাইবেলের তত্ত্বের বাইরে গেলেও পূর্বসূরি সম্পর্কে নিখাদ শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছেন পোপ ফ্রান্সিস। ভ্যাটিকান উদ্যানে পন্টিফিক্যাল অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সেস-এর চত্বরে পোপ ষোড়শ বেনেডিক্টের আবক্ষ মূর্তি উন্মোচন করতে গিয়ে তিনি জানান, 'জ্ঞান, বুদ্ধি এবং নিরন্তর প্রার্থনা তার হৃদয় প্রশস্ত করেছিল। বিশ্ববাসীর সেবায় পোপ ষোড়শ বেনেডিক্টকে উপহার দেয়ার জন্য ঈশ্বরকে অশেষ ধন্যবাদ।'- ওয়েবসাইট।

জয় পরাজয় আরো খবর

adv
সর্বশেষ সংবাদ
সাক্ষাতকার
adv
সব জেলার খবর
মুক্তমত
আর্কাইভ


বিজ্ঞাপন দিন

adv

মিডিয়া