৫৯ বছরে সন্তানের ‘মা’
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সন্তান জন্ম দেওয়ার সুখে ভাসছেন ৫৯ বছর বয়সের এক মা। কোলজুড়ে নবজাতক পাওয়ার আনন্দে চোখেমুখে আনন্দের দ্যুতি ছড়িয়ে পড়েছে ওই মায়ের।
যখন নাতি-নাতনিকে নিয়ে খেলা করার সময়, তখনই কোলে সন্তান এলো তার। কোলে একরত্তি শিশুটি দিব্যি চোখ পিটপিট করছে। আর সে দিকে মুগ্ধনয়নে তাকিয়ে আছেন প্রৌঢ়া মা।
মায়ের নাম শুক্লা রায়। সন্তান প্রসবের আগে ভর্তি হয়েছিলেন কলকাতার পার্ক স্ট্রিটের হাসপাতালে। এখন এই হাসপাতালে এই অসম সময়ের মাকে নিয়ে উতসবের আমেজ বইছে।
স্বামী বিকাশবন্ধু রায়। বয়স ৬৮। সেচ দফতরে চাকরি করতেন। এখন অবসরে। দুর্গাপুরে সপরিবার থাকতেন তারা। বৃদ্ধবয়সে সন্তান পেয়ে আনন্দিত তিনিও। কারণ, ২০১৩-র ২৫ জুন তাদের সন্তান পল্লবীর মৃত্যু হয় বর্ধমানের কাছে তালিত স্টেশনে ট্রেন থেকে পড়ে। একমাত্র মেয়ের মৃত্যুতে স্থবির করে দিয়েছিল পরিবারটিকে।
সেখানেই সবটা শেষ হয়ে যেতে দেননি শুক্লা। দুর্গাপুরের পাট চুকিয়ে কলকাতায় আসেন। সন্তান লালনের বাসনা তাকে স্থির থাকতে দিচ্ছিল না। পরিচিত অনেকেই দত্তক নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু শুক্লাদেবীর এক গো। নিজের শরীরে লালন করা সন্তানই চাই তার। তা কী ভাবে সম্ভব? আট বছর আগে মেনোপজ হয়েছে।
চিকিতসকের কাছে গেলেন। চিকিতসক জানালেন, সন্তানধারণ সম্ভব। কিন্তু অনেক ঝড়ঝাপটার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। শুক্লাদেবী জানালেন, তিনি সব কিছুর জন্য প্রস্তুত। শেষতক গর্ভে ভ্রুণ প্রতিস্থাপিত হল। আর সফল হলেন শুক্লা রায়।
চিকিতসক জানান, অন্য এক মহিলার থেকে ডিম্বাণু সংগ্রহ করে শুক্লাদেবীর স্বামীর শুক্রাণুর সঙ্গে তা নিষিক্ত করা হয়। তার পরে ভ্রূণ আকারে সেটি প্রতিস্থাপন করা হয় শুক্লাদেবীর জরায়ুতে। তার কথায়, সন্তান হারানো এক দম্পতির কোলে সুস্থ সন্তান তুলে দিতে পেরে ডাক্তার হিসেবে খুব তৃপ্তি পেয়েছি।
মজার ব্যাপার হচ্ছে, এক মেয়ে চলে গিয়েছিল ২৫ তারিখ। ১৪ মাস পরে ফের মেয়ে এসেছে কোলে। ওই ২৫ তারিখেই। তবে মাসটি হয়ে গেছে ভিন্ন ভিন্ন।
উল্লেখ্য, মাস কয়েক আগে কলকাতা শহরেই মা হয়েছিলেন ৫৬ বছরের এক নারী। তা দেখে তখনই তাক লেগে গিয়েছিল অনেকের।