পুলিশকে গণপিটুনি
ডেস্ক রিপোর্ট : অবৈধ অস্ত্র ব্যবসায়ীকে ছেড়ে দেয়ায় এক পুলিশ সদস্যকে পিটুনি দিয়েছে স্থানীয় জনগণ। রোববার সন্ধ্যায় রাজশাহী জেলার চারঘাট উপজেলার হলিদাগাছি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
পরে চারঘাট থানার পুলিশ ও রাজশাহীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গিয়ে জনতার হাতে আটক পুলিশ সদস্যকে উদ্ধার করেন। ওই সময় অস্ত্র ব্যবসায়ীর ফেলে যাওয়া পিস্তল ও পাঁচ রাউন্ড গুলিও উদ্ধার করে পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যার পরে চারঘাট থানার উপ-পরিদর্শক তৌফিক পারভেজ পুলিশ ভ্যান নিয়ে একটি মোটরসাইকেলকে অনুসরণ করছিলেন। ওই মোটরসাইকেলে দুইজন আরোহী ছিলেন। উপজেলার হলিদাগাছি রেলগেটের কাছে এসে মোটরসাইকেল রেখে আরোহীরা একটি চায়ের দোকানে বসেন। এরই মধ্যে উপ-পরিদর্শক তৌফিক পারভেজ তাদের সঙ্গে কথা বলতে শুরু করেন।
এ সময় মোটরসাইকেল আরোহীদের একজন সেখান থেকে উঠে গিয়ে পাশের নারায়ণ নামের এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীর বাড়িতে প্রবেশ করে। কিছুক্ষণ পরে ওই ব্যক্তি ফিরে এসে পুলিশের উপ-পরিদর্শকের সঙ্গে চা পানের আসরে যোগ দেয়।
এর পরপরই নারায়ণ চায়ের দোকানে এসে ওই মোটরসাইকেল আরোহীকে তার জিনিসটি নিয়ে আসতে বলেন। কিন্তু তার কথায় কান না দিলে তিনি ওই মোটরসাইকেল আরোহীর কলার চেপে ধরেন। এ সময় পাশে বসা সাদা পোশাকের পুলিশ সদস্য নারায়ণকে ধমক দেন।
নারায়ণ বলেন, তার বাড়িতে এই লোক মারাত্মক ঘটনা ঘটিয়ে এসেছে। এ কথা বলার পরেও পুলিশ সদস্য উল্টো নারায়ণকেই ধাক্কা দেন। পরে নারায়ণ ওই ব্যক্তিকে ছেড়ে দিয়ে পুলিশের কলার চেপে ধরেন। তখন পুলিশের সদস্য নিজেকে চারঘাট থানার পুলিশ বলে পরিচয় দেন।
কিন্তু সাদা পোশাকে থাকার কারণে নারায়ন তাকে পুলিশ বলে বিশ্বাস করেননি। ভুয়া পুলিশ বলে তাকেই টেনে হেঁচড়ে নিয়ে যেতে থাকেন। ঘটনা দেখে স্থানীয় লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তারা ভুয়া পুলিশ মনে করে উপপরিদর্শক তৌফিক পারভেজকে পেটাতে শুরু করেন। এ সময় বাবর আলী নামের এক ব্যক্তি উত্তেজিত জনতার হাত থেকে পুলিশ সদস্যকে উদ্ধার করে তার বাড়িতে নিয়ে গিয়ে আটকে রাখেন।
এই সুযোগে মোটরসাইকেল ফেলে দুই অস্ত্রব্যবসায়ী পালিয়ে যান। এ সময় আশপাশের মানুষ এলাকা ঘিরে ফেলেন। খবর পেয়ে চারঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খোন্দকার গোলাম মর্ত্তুজা ও রাজশাহীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রশিদুল হক সেখানে গিয়ে নারায়ণের বাড়ি থেকে পিস্তলসহ পাঁচটি গুলি উদ্ধার করেন এবং বাবর আলীর বাড়ির থেকে পুলিশ সদস্যকে উদ্ধার করেন।
এর আগেই পুলিশ ভ্যানের চালক গাড়ি রেখে পালিয়েছিলেন। পরে পরিস্থিতি শান্ত হলে তিনি গাড়ি নিয়ে যান।
ঘটনাস্থল থেকে রাতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রশিদুল হক জানান, তিনি এলাকার মানুষের বক্তব্য শুনছেন। থানায় গিয়ে পুলিশের কথা শুনবেন। তিনি বলেন, তার ধারণা একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। জনতা উত্তেজিত না হলে দুই অস্ত্র ব্যবসায়ীকে ধরা যেত।