মন্ত্রী পাগল, গ্রেফতার করুন- আল্টিমেটাম সাংবাদিক সমাজের
নিজস্ব প্রতিবেদক : সাংবাদিকদের সম্পর্কে অশালীন, অশোভন ও অরুচিকর মন্তব্য করায় সমাজকল্যাণমন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলীকে পাগল আখ্যা দিয়ে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাকে গ্রেপ্তার ও অপসারণের দাবি জানিয়েছে সাংবাদিক সমাজ।
রোববার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) এবং ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) একাংশের উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশে এ দাবি জানানো হয়। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল করা হয়।
সমাবেশে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজী বলেন, ‘কিছুদিন আগেও এই মহসিন সাংবাদিকদের আইনে বেঁধে ফেলার হুমকি দিয়েছিল। এর পরপরই সম্প্রচার নীতিমালার নামে কালো আইন করা হয়েছে। গণমাধ্যমের গলা চেপে ধরতে, সাংবাদিকদের অনুগত বানানোর জন্য তথ্যমন্ত্রী এই আইন প্রণয়ন করেছে। এর আগে নারায়ণগঞ্জের শামীম ওসমানও সাংবাদিকদের গালাগালি করেছে। এই মন্ত্রিসভাকে কোনোভাবেই সুস্থ মন্ত্রিসভা বলা যায় না। এটা পরিপূর্ণ পাগলের মন্ত্রিসভায় পরিণত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সমাজকল্যাণমন্ত্রীকে অবশ্যই পদচ্যুত করে গ্রেপ্তার করতে হবে। তা না হলে সাংবাদিক সমাজ দেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আরও কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলবে। ডিইউজে’র সভাপতি আবদুল হাই শিকদার বলেন, ‘এই মন্ত্রিসভা হচ্ছে একটা আবর্জনার স্তুপ। এই স্তুপের সবচেয়ে নোংরা আবর্জনাটি হচ্ছে মহসিন আলী। আবর্জনার স্থান যেমন ভাগাড়ে তেমনি এই মন্ত্রীদেরকেও ভাড়াড়ে পাঠানো হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এমন মন্তব্যের পরেও যদি এই মন্ত্রীকে প্রধানমন্ত্রী প্রাধান্য দেন তাহলে বুঝব প্রধানমন্ত্রীও মানসিক বিকারগ্রস্ত।’
এসব মন্ত্রীকে শৃঙ্খলিত করার জন্য সর্বস্তরের সংবাদকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। মন্ত্রীসভাকে পাগলের মন্ত্রিসভা আখ্যায়িত করে ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গির আলম প্রধান বলেন, ‘এমন পাগল মন্ত্রীর জায়গা হওয়ার কথা ছিল পাবনার হেমায়েতপুরে। কিন্তু মন্ত্রিসভায় তার স্থান কিভাবে হলো বুঝতে পারি না।
সমাবেশে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সভাপতি ইলিয়াস খান বলেন, ‘সংবাদপত্রের টুটি ধরার জন্য এই সরকার উঠে পড়ে লেগেছে। মন্ত্রীরা একের পর এক গণমাধ্যম নিয়ে অশোভন কথাবার্তা বলে যাচ্ছে। দুর্বৃত্ত এই সমাজকল্যাণমন্ত্রী সাংবাদিকদের সম্পর্কে যে মন্তব্য করেছে তাকে পদচ্যুত করতে হবে এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।’
জাতীয় প্রেসক্লাবের যুগ্ম-সম্পাদক কাদের গনি চৌধুরী তার বক্তব্যে এমন দুষ্ট লোককে মন্ত্রিসভা থেকে বের করে দিতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান। বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম আব্দুল্লার সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন- বিএফইউজের সভাপতি শওকত মাহমুদ, বিএফইউজের সহকারী মহাসচিব মোফাজ্জল হোসেন প্রমুখ।
উল্লেখ্য, গতকাল শনিবার সিলেট জেলা পরিষদ মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অশ্লীল ভাষায় ব্যক্তিগত ক্ষোভ ঝারেন মন্ত্রী। তিনি বলেন,‘সাংবাদিকদেরকে ঠিক করতে নীতিমালা হয়েছে। ওই দিন কেবিনেট মিটিংয়ে যদি আমি থাকতাম, তবে সাংবাদিকদের (লেখার অযোগ্য) দিয়ে বাঁশ ঢুকাতাম। সাংবাদিকদের এখন এমনভাবে ঠিক করা হবে, যাতে নিজের স্ত্রীকে পাশে নিয়েও শান্তিতে ঘুমাতে না পারে। সাংবাদিকরা হচ্ছে বদমাইশ, চরিত্রহীন, লম্পট।’