adv
১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিদ্যালয়ের সভাপতি বিয়ে করলেন পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীকে

111ডেস্ক রিপোর্ট : ‘আমি রহিমের সংসার করতে চাই না, স্কুলে পড়তে চাই। রহিমের ঘরে বউ আছে। দুইটা বাচ্চা আছে। আমি ওর সাথে ঘর করব না, আপনারা আমারে বাঁচান’।
এভাবেই আকুতি জানাচ্ছিল লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের খারুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম  শ্রেণির ছাত্রী রাশেদা খাতুন (১৩)। রাশেদা ওই এলাকার আ. বাকির মেয়ে ।
 গত ২৬ জুন ওই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. আবদুর রহিম (৩১) তাকে জোর করে বিয়ে করেন বলে অভিযোগ করেছে রাশেদা। এফিডেভিট করে রাশেদার বয়স দেখানো হয়েছে ১৮ বছর। কিন্তু মোগলহাট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) জন্মনিবন্ধন কার্ড অনুযায়ী তার বয়স ১৩ বছর।
রাশেদার দাবি, ২৬ জুন আবদুর রহিম তাকে লালমনিরহাট শহরে নিয়ে যান। সেখানে তাকে বিয়ে করবেন বলে রহিম জানান। তখন রাশেদা অনেক আপত্তি ও কান্নাকাটি করে। কিন্তু রহিম ভয় দেখালে সে এফিডেভিটের কাগজে স্বাক্ষর করতে বাধ্য হয়।
রাশেদার পরিবারের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাশেদাকে বিয়ে করে আবদুর রহিম নিজের বাড়িতে এনে প্রায় এক মাস আটকে রাখেন। এলাকার অন্যতম ধনী ব্যবসায়ী হিসেবে তার প্রভাব থাকায় কেউ তাকে বাধা দিতে পারেননি। গত শুক্রবার রাশেদাকে তার বাবার বাড়িতে যেতে দেন রহিম।
এ বিষয়ে আবদুর রহিমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, রাশেদাকে  দেখে পছন্দ হওয়ায় তিনি তাকে বিয়ে করতে চান। বয়সজনিত আইনি বাধা দূর করার জন্য লালমনিরহাট নোটারি পাবলিক কার্যালয়ে গিয়ে এফিডেভিট করে তিনি রাশেদার বয়স বাড়ান। পরে কাজীর মাধ্যমে রেজিস্ট্রি করে বিয়ে করেন।
রহিমের ভাষ্যমতে, গ্রাম অল্প বয়সে মেয়েদের বিয়ে হয়। দ্বিতীয় বিবাহ বা বাল্যবিবাহ করাকে তিনি দোষের কাজ বলে মনে করেন না।
রাশেদার বড় ভাই মোগলহাট ইউনিয়নের ইটাপোতা দাখিল মাদ্রাসার দশম শ্রেণির ছাত্র মিজানুর রহমান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। দুর্বল বলে গ্রামের বড়লোক আবদুর রহিম আমার ছোট বোনকে মিথ্যা কথা বলে বিদ্যালয় থেকে লালমনিরহাট শহরে নিয়ে এফিডেভিট করে বিয়ে করেছে। আমরা কী করব তা বুঝে উঠতে পারছি না।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বলেন, ‘আলোচিত এ বাল্য বিবাহের বিষয়টি আমি অবহিত আছি। এ বিষয়ে মোগলহাট ইউপি  চেয়ারম্যানকে আমি বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন ১৯২৯ সালের ৯ ধারা অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে বলেছি।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউপি চেয়ারম্যান মো. হাবিবুর রহমান জানান, ঘটনাটি তিনি জানেন।
খারুয়া সরকারি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম জানান, ২০ জুলাই  বিষয়টি তিনি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ও লালমনিরহাট সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে জেলা প্রাথমিক অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) নবেজ উদ্দিন জানান, ঘটনাটি জানার পর লালমনিরহাট সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। এত দিন বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় তদন্ত হয়নি। গত বৃহস্পতিবার বিদ্যালয় খুলেছে, এখন তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

জয় পরাজয় আরো খবর

adv
সর্বশেষ সংবাদ
সাক্ষাতকার
adv
সব জেলার খবর
মুক্তমত
আর্কাইভ


বিজ্ঞাপন দিন

adv

মিডিয়া