ছাত্রলীগ থেকে এখন ‘বাবা লীগ’
ডেস্ক রিপোর্ট : লক্ষীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগ কমিটির ৫১ সদস্যের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকসহ অধিকাংশ নেতারাই বিবাহিত এবং বিয়ে করে সংসার জীবন নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন। মেয়াদোত্তীর্ণ এ কমিটিকে জোড়াতালি দিয়ে কার্যক্রম চালাচ্ছে দলটির নীতিনির্ধারকরা।
এদিকে দীর্ঘদিন ধরে নতুন কমিটি না হওয়ায় ৫১ সদস্যের কার্যকরী কমিটির প্রায় সবার ছাত্রত্ব শেষ হয়ে গেছে। আর ওই কার্যকরি কমিটির বেশির ভাগ সদস্যই ঠিকাদার, ব্যবসায়ী, চাকরিজীবীসহ বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত। আবার রামগঞ্জ ত্যাগ করে বিদেশেও রয়েছেন বেশ কয়েকজন। বিয়ে করে অনেকেই হয়েছেন সন্তানের বাবা। এ কারণে কেউ কেউ ব্যঙ্গ করে স্থানীয় ছাত্রলীগকে ‘বাবা লীগ’হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
স্থানীয় ছাত্রলীগের একাধিক সূত্র থেকে জানা গেছে, ২০০৬ সালে গঠিত এ কমিটির অনেক সদস্যেরই বর্তমানে ছাত্রত্ব নেই। কয়েকজন করছেন ব্যবসা, কেউ হচ্ছেন জনপ্রতিনিধি। দীর্ঘদিন ধরে নতুন কমিটি না হওয়ায় মেয়াদোর্ত্তীর্ণ এ কমিটি দিয়ে চালানো হচ্ছে ছাত্রলীগের কার্যক্রম।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ছাত্রলীগের সভাপতি সৈকত মাহমুদ শামছু চার বছর পুর্বে বিয়ে করেন। সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান ভূইয়া সুমন দুই সন্তানের বাবা। সাংগঠনিক সম্পাদক পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ড কাজীরখীল গ্রামের কাউন্সিলর মামুনুর রশিদও বিয়ে করেছেন। সহ-সভাপতি রাকিবুল হাসান মামুন বিয়ে করেছেন কয়েক বছর আগে। অপর সহ-সভাপতি ফয়েজ উল্ল্যা রয়েছেন বিদেশে। যুগ্ম সম্পাদক মাসুদ আলমও বিয়ে করেন প্রায় চার বছর আগে, সন্তানও রয়েছে তার। অপর যুগ্ম সম্পাদক মহসিন আউয়াল মঞ্জু বিয়ে করে সংসার জীবন নিয়েই ব্যস্ত।
অভিযোগ রয়েছে দীর্ঘদিন থেকে তাদের ছাত্রত্বও নেই। তবুও ছাত্রলীগের পদধারী নেতা তারা। ছাত্রলীগের কর্মী মো. সুমন মজুমদার বলেন, ৮ বছর ধরে অছাত্রদের দিয়ে চলছে উপজেলা ছাত্রলীগ। কমিটির ৫১ জন সদস্যের অধিকাংশেরই ছাত্রত্ব নেই। তারা বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত রয়েছেন। বিয়ের পর হয়েছেন সন্তানের বাবা। অছাত্ররা পদ আঁকড়ে থাকায় উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক ততপরতাও ঝিমিয়ে পড়েছে। একই ধরনের কথা বলেন ছাত্রলীগের কর্মী সাইফুলসহ কয়েকজন।
উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সুমন ভূঁইয়া জানান, ৫১ সদস্যের কমিটির অধিকাংশ নেতা বিবাহিত সত্য। তবে বিবাহিত ও ছাত্রত্ব নেই তার পরেও ছাত্রলীগ নেতারা দলীয় প্রতিটি কর্মসূচি, সভা-সমাবেশেসহ সকল কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। তাদেরকে ছাড়া উপজেলার কোনো কার্যক্রমই সফল হয় না।
তিনি আরো বলেন, প্রায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রলীগের শক্তিশালী কমিটি রয়েছে। বর্তমান কমিটির নেতাকর্মীদের কারনেই উপজেলা ছাত্রলীগে বিভেদ নেই। এজন্য স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা এবং মহিলা এমপি ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ডে সন্তুষ্ট।
প্রায় একই কথা বলেন উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সৈকত মাহমুদ শামছু।