adv
১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জিব কেটে দেবতার সেবায় উতসর্গ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের এক কিশোর দেবতা শিবের  সেবায় তার নিজের জিব উতসর্গ করেছে। সম্প্রতি স্থানীয় এক শিবমন্দিরে  বসে একটি ভোতা ব্লেড দিয়ে সে তার জিবটি কেটে ফেলে। এরপর এটি একটি বাটিতে করে শিবের পায়ে উতসর্গ করে।
তার নাম লালমোহন সরেন। বয়স ১৭। এই প্রদেশেরই দুগদা জেলার বিখ্যাত মন্দির হচ্ছে মহাদেবগ্রহা। সেদিন সকালে প্রতিদিনের মতোই অসংখ্য ভক্ত পূজো করছিলেন। তখন মন্দিরের একপাশে বসে আপন মনে সাওতাল কিশোর কাটছিল নিজের জিবটি। এ সময়  চাতাল লাল হয়ে যায় ফোটা ফোটা রক্তে।।
কাটার পর সে তার পায়ের কাছে রাখা একটি বাটিতে জিব আর একটি চিরকুট রাখে। চিরকুটে লেখা ছিল,‘আমি ভগবান শিবের সেবায় আমার জিব উতসর্গ করলাম।’দয়া করে আমাকে মন্দির থেকে তাড়িয়ে দিও না, আমি সারাজীবন ভগবানের পায়ের কাছে বসে থাকতে চাই।
তবে এ খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন মন্দিরের প্রধান পুরোহিত। তারপর লালমোহনকে বুঝিয়ে শুনিয়ে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। হাসপাতালের চিকিতসকরা তার জিবটি জোড়া লাগানোর চেষ্টা করেন। তবে তাদের এ প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে সে নিজের বাড়িতে ফিরে এসেছে লালমোহন।
ঝাড়খণ্ডের ওই অঞ্চলটি সাওতাল উপজাতিদের বাস। এরা নানা ধরনের কুসংস্কারে বিশ্বাসী। এছাড়া দেবতাদের সন্তুষ্ট করতে তারা নানা ধরণের অদ্ভূত ধর্মীয় আচারাদি পালন করে থাকে। লালমোহন এখন বাড়িতেই আছে। তাকে দেখভাল করছেন তার মা। কথাবার্তা বলতে পারছে না সে। হয়তোবা আর কোনদিনই মুখ ফুটে মনের ভাবাবেগ প্রকাশ করতে পারবে না। খাওয়া-দাওয়াও করতে পারছে না ঠিকমত। কেবল তরল খাবার খাচ্ছে। তারপরও কোনো অনুশোচনা নেই তার। নিজের কাজে দারুন গর্বিত সে। যদিও এ ঘটনায় তার পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। তবে ছেলের অপকর্মটি একপ্রকার মেনেই নিয়েছেন মা।
তার মা লালমনি সরেন বলেন, আমার ছেলে ছোটবেলা থেকেই ধর্মকর্মে আগ্রহী। সে প্রতিটি ধর্মীয় আচারাদি নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করত। কিন্তু তাই বলে নিজের জিব কেটে শিবকে উৎসর্গ করবে তা কখনো ভাবিনি। ছেলের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন মা বলেন,‘আমি জানিনা ওর কি হবে! সে আর কোনো দিন কথা বলতে পারবে না। এখন তার ভবিষৎ কী হবে তা ঈশ্বরই জানেন।
তবে তিনি বিশ্বাস করেন ঈশ্বর তার ছেলেকে দেখবেন। চার সন্তানের জননী আরো বলেন, আমার ছেলে তার জিব দেবতাকে উতসর্গ করেছে। এখন ঈশ্বরই তার সব ইচ্ছা পূরণ করবে এবং তাকে একটি সুন্দর জীবন দেবে।
তবে লালামোহনের এ কাজে একটুও বিস্মিত হননি স্থানীয়রা। কেননা এটি কোনো নতুন ঘটনা নয়। বরং এ নিয়ে সংবাধ মাধ্যমের বাড়াবাড়িতেই আশ্চর্য হচ্ছে তারা। স্থানীয় বাসিন্দা মনোজ শর্মা বলেন, এই আদিবাসীরা কুসংস্কারাচ্ছন্ন এবং অদ্ভূত সব ধর্মীয় আচারাদি পালনে অভ্যস্থ। ২০১১ সালে এই একই মন্দিরে এক বালক তার দুটি আঙ্গুল কেটে দেবতাকে উৎসর্গ করেছিল।
তিনি আরো বলেন, এ ধরণের ঘটনা আমাদের এখানে নতুন নয়। যদিও বাইরের অনেকে এতে আশ্চর্য হন।

 

জয় পরাজয় আরো খবর

adv
সর্বশেষ সংবাদ
সাক্ষাতকার
adv
সব জেলার খবর
মুক্তমত
আর্কাইভ


বিজ্ঞাপন দিন

adv

মিডিয়া