নাশকতায় জড়িত নেতাকর্মীদের তালিকা হচ্ছে
ঢাকা: নাশকতার সঙ্গে জড়িত ও মদদদাতা বিএনপি, জামায়াত ও জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের নামের তালিকা চেয়ে পাঠিয়েছে সরকার। সরকারকে দু’তিন দিনের মধ্যে এ তালিকা দেওয়ার নির্দেশনা পেয়ে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোও তালিকা তৈরির কাজ শুরু করেছে।
সাম্প্রতিককালে হরতাল-অবরোধসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে নাশকতা বেড়ে যাওয়ায় এ তালিকা চাওয়া ও তা করতে কাজ চলার কথা নিশ্চিত করেছে সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক গোয়েন্দা কর্মকর্তা বাংলানিউজের কাছে এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
সহিংসতায় জড়িত ও মদদদাতা দলগুলোর শীর্ষ পর্যায় থেকে শুরু করে মাঝারি পর্যায় পর্যন্ত নেতাকর্মীদের নামের তালিকা বুধবার চাওয়া হয়েছে। আগে কেবল বিএনপি-জামায়াত সংশ্লিষ্টদের নামের তালিকা চাওয়া হলেও এবার এর সঙ্গে জাতীয় পার্টি যোগ হয়েছে বলেও সূত্র জানায়।
এদিকে তালিকা দিতে দেশে চলমান রাজনৈতিক সহিংসতায় জড়িত নেতাদের নামের তালিকা তৈরি করছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। সারাদেশে বিএনপি, জামায়াত এমনকি জাতীয় পার্টির নেতাদেরও এই তালিকায় রাখা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশে মাঠ পর্যায়ে কারা সহিংসতা ঘটাচ্ছে এবং কারা মদদদাতা শুধুমাত্র এ সকল নেতাদের নামের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। দু’তিন দিনের মধ্যেই এই তালিকা সরকারের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে জমাদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই লক্ষ্যে কাজ করছেন একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা।
সূত্রে জানা গেছে, নির্দলীয় ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহালের দাবিতে সারাদেশে অবরোধ কর্মসূচি পালন করে আসছে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দল। গত সপ্তাহ থেকে শুরু হওয়া টানা এ অবরোধে প্রায় প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন জেলায় সহিংস ঘটনা ঘটছে। ঘটছে প্রানহানির ঘটনাও। এমনকি রেললাইনের স্লিপার খুলে নাশকতা চালানো হচ্ছে। শুধুমাত্র গত বুধবারই গাইবান্ধায় রেলপথে নাশকতায় মারা যান ৫ জন।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে এ সকল নাশকতায় নেতৃত্বে ও জড়িত থাকা রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের নামের তালিকা তৈরির জন্য গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়।
নির্দেশে বলা হয়, কেন্দ্র থেকে ঘোষিত কর্মসূচি মাঠ পর্যায়ে কোন কোন নেতারা বাস্তবায়নের জন্য কর্মীদের নির্দেশ দিয়ে থাকেন এবং কারা কারা মাঠে থাকেন এমন নেতাদের নাম, মোবাইল নম্বর এবং তাদের অবস্থান কোথায় তা নিশ্চিত করতে হবে। নাশকতায় জড়িত বিএনপি, জামায়াত ছাড়াও অন্য কোনো রাজনৈতিক দল, এমনকি যদি জাতীয় পার্টির নেতারাও জড়িত থাকেন, তবে তাদের নামও তালিকাভুক্ত করতে হবে। নাশকতায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত এ সকল রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের নাম দ্রুত তৈরির জন্য বলা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য বাংলানিউজকে বলেন, রাজধানী ঢাকা ছাড়াও সারাদেশে এই তালিকা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। বুধবার তারা এ নির্দেশনা পেয়েছেন। নির্দেশনা পাওয়ার পরপরই তারা মাঠে কাজও শুরু করেছেন।
গোয়েন্দা সংস্থার ওই সদস্য জানান, আগামী দু’তিন দিনের মধ্যেই সারাদেশে এ তালিকা তৈরির কাজ শেষ হয়ে যাবে। তালিকা শেষ হওয়ার পর তারা উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে জমা দেবেন।
এক প্রশ্নের জবাবে ওই গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য বাংলানিউজকে বলেন, মধ্যম সারির অর্থাৎ নির্দেশনা বাস্তবায়নকারী মাঠ পর্যায়ের এই নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হয়তো গ্রেফতার অভিযান শুরু হতে পারে। এ কারণে তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।