আইসিইউতে এখনো লড়ছেন ৭ জন
ঢাকা: ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট। আগুনে পোড়া মানুষের আর্তনাদে যার প্রতিটি দেয়াল স্তব্ধ। চোখের সামনে নিজের সন্তানকে অসহ্য যন্ত্রণায় ছটফট করতে দেখা পাথরপ্রায় মা জানেন বার্ন ইউনিটের প্রতিটা সেকেন্ড কিভাবে কাটে। প্রতিটা মিনিটের যন্ত্রণা জানেন এ ইউনিটে যারা চিকিৎসা নিচ্ছেন তারা।
গত ২৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া রাজনৈতিক সহিংসতায় এ পর্যন্ত ঢামেকের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে চিকিৎসা নিয়েছেন ১২০ জন। অগ্নিদগ্ধ এই ১২০ জনের সবাইকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়নি। ভর্তি হতে হয়েছে ৭০ জনকে। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েই চলে গেছেন।
এখনো হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৩২ জন। এ ৩২ জনের সাত জন এখন আইসিইউতে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। দিনের পর দিন একটা খারাপ সম্ভাবনা থেকে পালানোর যেন বৃথা চেষ্টা করছেন তারা। প্রতিটা মুহূর্ত তারা একই প্রার্থনা করছেন। একই ক্ষোভ, দুঃখ আর হতাশায় অভিশপ্ত করছেন এ দেশের রাজনীতিকে
আইসিইউতে এখন যে সাত জন চিকিৎসা নিচ্ছেন তাদের চার জন ভর্তি হয়েছেন গত ২৮ নভেম্বর। শাহবাগে বিহঙ্গ পরিবহনের একটি বাসে দুর্বৃত্তদের ছোড়া পেট্রোলবোমায় দগ্ধ হন তারা। সে ঘটনায় মোট ১৯ যাত্রী অগ্নিদগ্ধ হয়ে ঢামেকের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে ভর্তি হন। ২৮ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টার দিকে অগ্নিদগ্ধ হওয়ার পর রাত ১১টার দিকে মারা যান নাহিদ মোল্লা। নাহিদের বাড়ি মাদারীপুরের শিবচরের কুতুবপুর বাজারে।
নাহিদের মৃত্যুর পরদিনই মারা যায় রবিন। সর্বশেষ গতকাল মারা যায় ঢাকা কলেজের ছাত্র ওয়াহিদুর রহমান বাবু।
আইসিইউতে এখনো মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন শাহবাগের ওই ঘটনায় অগ্নিদগ্ধ ৪ জন। তারা হলেন, পুলিশের এএসআই নুরুন্নবী, রাহাজুল, আবু তালহা ও জাহাঙ্গীর।
আর বৃহস্পতিবার এ তালিকায় সর্বশেষ যুক্ত হলেন হাসান। ঘুমন্ত অবস্থায় অগ্নিদগ্ধ এই কিশোরের শরীরের ৯০ শতাংশ পুড়ে গেছে। চিকিৎসকরা বলছেন, তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এছাড়াও আইসিইউতে চিকিৎসা নিচ্ছেন ফরিদপুরের মেহেদি হাসান ও চট্টগ্রামের আব্দুল আজিজ।