রাজনৈতিক টানাপড়েনে কমেছে বৈদেশিক সহায়তা
ঢাকা: চলতি অর্থবছরের চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) বৈদেশিক সহায়তা কমেছে। এ সময় দাতারা ছাড় করেছেন মাত্র ৫৭ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলার। এর মধ্যে ঋণ ৪৩ কোটি ২০ লাখ ও অনুদান ১৪ কোটি ৪০ লাখ মার্কিন ডলার।
গত অর্থবছরের একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল ৮০ কোটি ৯০ লাখ মার্কিন ডলার। এর মধ্যে ঋণ ৬১ কোটি ও অনুদান ১৯ কোটি ৯০ লাখ মার্কিন ডলার।
পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত অর্থবছরের চার মাসের তুলনায় চলতি অর্থবছরের চার মাসে ২৩ কোটি ৩০ লাখ মার্কিন ডলার কম বৈদেশিক অর্থছাড় হয়েছে।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সর্বশেষ হিসেব অনুযায়ী এ তথ্য জানা গেছে।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ বখত বাংলানিউজকে বলেন, সরকার প্রকল্প বাস্তবায়নের চেয়ে নির্বাচনের দিকে বেশি ঝুঁকে পড়েছে। এর ফলে ঠিকমতো প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে না। অনেক প্রকল্পের প্রতি সরকারের কোনো নজরদারিও নেই।
রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে সরকারের বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পগুলো ভালোমতো মনিটারিংও করতে পারছে না। সেজন্য দাতারাও অর্থছাড় করছেন না।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে প্রকল্প বাস্ত্বায়নেও অগ্রগতি নেই। যেমন কোনো একটি সড়কের কাজ চলাকালীন সময়ে যদি ওই এলাকায় রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরাজ করে তবে সেই কাজ থেমে থাকে।
চলমান সংকট উত্তরণ প্রসঙ্গে জাহিদ বখত বলেন, এই সমস্যা সমাধান করতে হলে আন্ত:মন্ত্রণালয় একটি মনিটরিং টিম দরকার। তা না হলে সামনে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) দাতাদের কাছ থেকে পাওয়া প্রতিশ্রুতিও কমে গেছে। এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৩২ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলার।
এর মধ্যে ঋণ ১১৭ কোটি ২০ লাখ ও অনুদান ১৫ কোটি ৪০ লাখ মার্কিন ডলার। যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ১৭৭ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার।
তুলনামূলক পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, গত অর্থবছরের চার মাসের চেয়ে চলতি অর্থবছরের চার মাসে ৪৪ কোটি ৯০ লাখ মার্কিন ডলার প্রতিশ্রুতি কমেছে।
চলতি অর্থবছরের চার মাসে অর্থছাড়ে এগিয়ে থাকা দাতারা হচ্ছে বিশ্বব্যাংক ১২ কোটি মার্কিন ডলার (ঋণ), এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ১০ কোটি ৮০ লাখ মার্কিন ডলার (ঋণ), জাইকা ১৫ কোটি ৭০ লাখ মার্কিন ডলার (ঋণ), ইউএন সিস্টেম অনুদান ছাড় করেছে ৪ কোটি ৭০ লাখ এবং ভারত অনুদান ছাড় করেছে ৫ কোটি মার্কিন ডলার।