মন্ত্রী মহোদয়, বলুন তো ‘ঠিক গাধার মত দেখতে লাল রং এর প্রাণীটির নাম কী?’
শামস্ সয়ূজ : শাস্ত্রে একটি কথা আছে অধিকন্তু দোষায়’। অর্থাত, কোন কিছূ বেশি হয়ে গেলেও ক্ষতি নেই। কিন্তু এই বেশি বেশির চক্করেই এবার ফক্করে পড়ে গেলেন আমাদের মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী। দেশে এখন সোনার ছেলেমেয়েদের ছড়াছড়ি। আর এই সোনার ছেলেমেয়েদের নিয়েই বিপাকে পড়ে গেলেন তিনি। তার সোনার ছেলেমেয়েরা তার জন্য বয়ে এনেছে একঝুড়ি অপমান। একটু পরিসংখ্যানে চোখ বুলানো যাক।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় –
‘ক ‘ ইউনিটে ফেলের হার ৭৮.৫%। পাসের হার ২১.৫%।
খ ‘ ইউনিটে ফেলের হার ৯০.৪৫%। পাসের হার ৯.৫৫%।
‘গ ‘ ইউনিটে ফেলের হার ৭৯.৫%। পাসের হার ২০.৫%।
‘ঘ’ ইউনিটে ফেলের হার ৮৪%। পাসের হার ১৬%
এই যখন সোনা ফলানো দেশের সোনার সন্তানদের নমুনা তখন মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর জন্য বলতেই হয় ‘তোমাকে বধিবে যে , গোকুলে বাড়িছে সে’। আর জনাব নাহিদ সেই গোকুল যে সাজিয়ে গুছিয়ে দিলেন আপনিই। শিক্ষাব্যবস্থার বারোটা বাজিয়ে যখন একের পর এক প্রশ্নপত্র বাজারে মুড়ি-মুড়কির মত ঝরে পড়তে লাগলো তখন আপনি রইলেন নিশ্চুপ।
আপনার তোতা-ময়নারা যখন জ্ঞানের ভারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আকাশে উড়তে ব্যর্থ হয়ে পতনমূর্চ্ছা ঘটে তখন যে আপনার গোস্বা হওয়াই স্বাভাবিক। আর সেই গোস্বা ঝাড়তে আপনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নামক দুষ্টু পদ্ধতিই বাতিলের মত দিয়ে দিলেন। বিনা পরীক্ষায় ভর্তিকৃত সোনার ছেলেমেয়েরা যদি স্নাতক জীবনেও পাস এবং ফেলের হারের ফারাকটা আকাশ পাতাল করে ফেলে তবে? তার চাইতে বরং এক কাজ করা যাক। এসব ভর্তি টর্তি বাতিল করে সরাসরিই সকলের হাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদ তুলে দেওয়া হোক। তাহলেই সকল সমস্যার সমাধান।
মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী মহোদয়, আপনি কখনও হাসেন কখনও কাঁদেন, আবেগে আবেগে জর্জরিত হয়ে আপনি কখনও কখনও অনেক কিছুই বলে ফেলেন। কিন্তু শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানগুলোতে আপনি ছাত্রলীগের সন্ত্রাস বন্ধ করতে পারেননা, পারেননা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে লেগে থাকা সেশনজট ছাড়াতে। তবে পরীক্ষা পদ্ধতি নিয়ে কেন আপনার এই টানা-হ্যাঁচড়া?
একটি ধাঁধা দিয়ে শেষ করি ‘ঠিক গাধার মত দেখতে লাল রং এর প্রাণীটির নাম কী?’। উত্তরটা হলো লাল রং এর গাধা।
মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী, রং কিন্তু বিবেচ্য নয়, গাধা তো গাধাই।